‘পাখির চোখ’ লোকসভা ভোট। বেঙ্গালুরুতে বিরোধী নেতারা মঙ্গলবার যখন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত থাকবেন, তখন দিল্লিতে সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডারা। উদ্দেশ্য, লোকসভা ভোটের আগে এনডিএ-র সম্প্রসারণ। বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা সোমবার বলেন, ‘‘এনডিএ-র মঙ্গলবারের বৈঠকে ৩৮টি দলের নেতৃত্ব হাজির থাকবেন।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুপ্রিয়া পটেলের আপনা দল (সোনেলাল) এবং পশুপতি পারসের রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টির মতো সহযোগী দলগুলির পাশাপাশি এনডিএতে সদ্য যোগ দেওয়া জিতনরাম মাঝিঁর ‘হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা’ (হাম), উপেন্দ্র কুশওয়াহার ‘রাষ্ট্রীয় লোক জনতা দল’ (আরএলজেডি), ওমপ্রকাশ রাজভরের ‘সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি’(এসবিএসপি) আমন্ত্রণ পেয়েছে এই বৈঠকে। ডাকা হয়েছে, কংগ্রেস মুক্ত উত্তর-পূর্ব গঠনের লক্ষ্যে ২০১৬ সালে বিজেপির নেতৃত্বে তৈরি ‘নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স’ (নেডা)-এর শরিক দল এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা গোষ্ঠী এবং বিদ্রোহী এমসিপি নেতা অজিত পওয়ারকেও।
এমনকি, একদা বিজেপির সহযোগী চন্দ্রবাবু নায়ডুর ‘তেলুগু দেশম পার্টি’ (টিডিপি), সুখবীর সিংহ বাদলের ‘শিরোমণি অকালি দল’, চিরাগ পাসোয়ানের ‘লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)’-এর কাছেও এনডিএ বৈঠকের চিঠি পৌঁছেছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। বিরোধী শিবিরের সাম্প্রতিক তৎপরতার আবহে বিজেপির এই উদ্যোগকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। প্রথম মোদী সরকারের আমলে এনডিএর নিয়মিত বৈঠক হলেও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি একারই নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পাওয়ার এনডিএ কার্যত গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছিল। গত চার বছর ধরে জোটের কোনও বৈঠকও হয়নি।
কিন্তু কর্নাটকের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের কাছে পর্যুদস্ত হওয়া, বিরোধীদের একজোট হওয়া, আসন্ন পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট এবং সর্বোপরি আগামী বছরের লোকসভা ভোটকে নজরে রেখেই বিজেপি শীর্ষনেতৃত্ব আবার শরিকদের প্রয়োজন অনুভব করতে শুরু করেছেন বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন। একই উদ্দেশে শুরু হয়েছে পুরনো শরিকদের নতুন করে কাছে টানার প্রক্রিয়াও। বিরোধী দলগুলি যে ভাবে একে অপরের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে চাপের মুখে পড়েছেন বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। জোট-শক্তির বিচারে ধারে এবং ভারে বিরোধীরা যে ভাবে শক্তি বৃদ্ধি করছে, তাতে দল কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে। তাঁদের মতে, সে কারণেই দ্রুত নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এনডিএ-র সম্প্রসারণে উদ্যোগী হয়েছেন মোদী-শাহ-নড্ডারা।