দু’মাস গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সে ভাবে জালে ওঠেনি ইলিশ। ফলে ডায়মন্ড হারবারে লোকসানের মুখ দেখতে হচ্ছিল মৎস্যজীবী এবং আড়তদারদের। এখন অবশ্য তাঁরা আশার আলো দেখছেন। চওড়া হয়েছে মৎস্যজীবীদের হাসিও। গত দু’দিনে সেখানকার বাজারে উঠেছে প্রায় ৮০ টন ইলিশ। অন্য দিকে, কয়েক বছর ধরেই দিঘার মৎস্যজীবীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল ইলিশ। প্রায় শূন্য হয়ে গিয়েছিল ইলিশ ওঠার সংখ্যা। কিন্তু এ বার খরা কিছুটা হলেও কাটল! প্রচুর পরিমাণে ইলিশ উঠল দিঘার বাজারে। এতে খুশির হাওয়া মৎস্যজীবী মহলে। মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, শুক্রবার অন্তত ৩৫ টন ইলিশ দিঘার বাজারে উঠেছে। আরও বেশ কিছু ট্রলার ফিরছে ইলিশ নিয়ে। ইলিশ ব্যবসায়ীদের আশা, এ ভাবে ইলিশ জালে ধরা পড়তে থাকলে বাজারে দাম কমতে পারে।
দিঘার মৎস্যজীবীদের দাবি, বর্ষার সময় গভীর সমুদ্র থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ডিম পাড়ার জন্য নদী মোহনার মিষ্টি জলের দিকে ছুটে আসে। ইলিশ ধরার সবচেয়ে উপযুক্ত আবহাওয়া হল পুবালি হাওয়ার সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। গত কয়েক দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গে মেঘলা আকাশ রয়েছে। হাওয়া অফিসও ইঙ্গিত দিয়েছে, সপ্তাহান্তে বৃষ্টি শুরু হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। ফলে চলতি মরসুমে ইলিশের আমদানি আরও কিছুটা বাড়তে পারে, জোগানও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারে বলেই মনে করছেন মৎস্যজীবীদের একাংশ। দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, “আজ দিঘার বাজারে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ টন ইলিশের আমদানি হয়েছে। এই মরসুমে প্রথম বার এত পরিমাণে ইলিশ দিঘার বাজারে এসেছে।”
গত কয়েক বছরে ইলিশে ব্যাপক খরা চললেও এ বার অন্তত সাধারণের নাগালে ইলিশ পৌঁছবে বলেই মনে করছেন শ্যামসুন্দর। তিনি বলেন, ‘‘এর আগে কোনও দিন ১০০ থেকে ২০০ কেজি ইলিশ উঠেছে। তা একেবারেই পর্যাপ্ত নয়। বাজারের চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত কম। এ বার বাজারে ইলিশের জোগান বাড়বে। আজ দিঘার বাজারে যে ইলিশ এসেছে, তার ওজনও বেশ ভাল।’’
মাছ বিক্রেতারাও জানাচ্ছেন, শুক্রবার ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এসেছে পাইকারি বাজারে। তার দর সাড়ে ৫০০ টাকা মতো ছিল। ৮০০-৯০০ গ্রামের ইলিশ কেজি প্রতি ১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে পাইকারি বাজারে। কেজি প্রতি ১৬০০- ১৮০০ টাকার বিক্রি হচ্ছে বড় ইলিশও। মাছ ব্যবসায়ী সমীর মণ্ডল বলেন, ‘‘জোগান ঠিক থাকলে খুচরো বাজারে এ বার ইলিশের দর এ বার জনসাধারণের সাধ্যের মধ্যেই থাকবে।’’
ডায়মন্ড হারবারের মৎস্যজীবীরাও জানাচ্ছেন, গত দু’দিনে প্রায় ৮০ টন ইলিশ ঢুকেছে নগেন্দ্র বাজারে। গত দু’মাস গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সে ভাবে জালে ওঠেনি ইলিশ। এখন অবশ্য তাঁরা আশার আলো দেখছেন। এক আড়তদারের কথায়, ‘‘ইলিশের পাইকারি দর এখন কেজি প্রতি ৭০০ টাকা যা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। তবে এ ভাবে ইলিশের আমদানি হতে থাকলে দাম কমতে পারে।’’