আবারও একজন স্বয়ংসেবকের রক্ত ঝড়ল ভারতের মাটিতে। এবার গত মঙ্গলবার‚ ১১ই জুলাই ২০২৩ এ শঙ্কর প্রসাদ দে নামে ৫৫ বছর বয়সী বনবাসী কল্যাণ কেন্দ্রের জেলা যোগাযোগ প্রধান এবং গ্রাম রক্ষা দলের ব্লক সভাপতিকে ধানবাদের পূর্ব টুন্ডি ব্লক এলাকায় অবস্থিত দুম্মা গ্রামে গুলি করে হত্যা করা হয়। শঙ্করপ্রসাদ টুন্ডি এলাকায় গরু চোরাচালান রোধে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাঁর কারণেই ওই অঞ্চলে গোপাচার এর সংখ্যা কমে এসেছিল।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার গভীর রাতে‚ যখন শঙ্কর তার নিয়মিত দায়িত্ব পালনের জন্য শাহারপুরায় গ্রাম রক্ষা দলের চেকপোস্টে যাচ্ছিলেন। হাতসারা ও দুম্মা গ্রামের মধ্যে, একটি পুকুরের কাছে, আততায়ীরা তার খুব কাছ থেকে বুকে ছয়টি গুলি চালায়। দুঃখজনকভাবে ভোর ৫টা পর্যন্ত তার প্রাণহীন দেহটি সেখানেই পরে ছিলো। পঞ্চায়েতের ডেপুটি প্রধান চিন্তামণি দে সেখান থেকে যাওয়ার সময় তাঁর মৃতদেহে হোঁচট খেলে তখন সবাই জানতে পারে।
শঙ্করের পরিবারের সদস্যরা তাকে হত্যার পেছনে কন্ট্র্যাক্ট কিলারের জড়িত থাকার সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
বুধবার ১২ই জুলাই‚ ২০২৩ এ তারা এক ঘন্টার জন্য গোবিন্দপুর-সাহিবগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। বিক্ষোভ চলাকালে রাস্তার মাঝখানে শঙ্কর প্রসাদ দে-র মৃতদেহও রাখা হয়।
ময়রানওয়াতান্ড পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান, বিপিন এবং বিজেপি ওবিসি মোর্চা জেলা সভাপতি মহাদেব কুম্ভকারের সাথে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা যোগাযোগ করেছে। তারা দোষীদের গ্রেপ্তারে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।
শঙ্কর দে-কে হত্যার ঘটনায়, তার ছেলে মধুসূদন দে তার খুড়তুতো ভাই মিহির দে, উমেশ দে এবং সুসেন দে সহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করেছেন। তারা সকলেই দুম্মা গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ তদন্তের অংশ হিসেবে উমেশ ও সুসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
শঙ্কর প্রসাদ দে-র মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড গোরক্ষকদের জীবনের বিপজ্জনক ঝুঁকির কথা তুলে সবার সামনে তুলে ধরেছে। গরু পাচার ও জবাই করা থেকে রক্ষা করার জন্য তারা যে কতটা বিপজ্জনক জীবনযাপন করে তা বুঝিয়ে দিয়েছে শঙ্করের আত্মত্যাগ। ওই অঞ্চলে গোরক্ষকদের মধ্যে একটি শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ঝাড়খন্ড বর্তমানে কংগ্রেস শাসনে আছে। কিছুদিন আগেও সেখানে আরএসএস এর শাখা বন্ধ করার চেষ্টা হয়েছিল। এবার সরাসরি একজন স্বয়ংসেবকের হত্যা হল। ঝাড়খণ্ড এর রাজ্য সরকার বারবার দেশবিরোধী কার্যকলাপ দমনে নিজেদের অপদার্থতা প্রমাণ করেছে। এই ঘটনা রাজ্যের বিরাজমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সমস্ত মহলে।
সৌভিক দত্ত