প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে রাজধানী। রাস্তাঘাট শুক্রবার থেকে জলমগ্ন। শনিবার সারা দিন দিল্লিতে টানা বৃষ্টি হয়েছে। মুষলধারে বৃষ্টির কারণে এক দিনেই শহরের ১৫টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে এক জনের।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ১৯৮২ সালের পর থেকে জুলাই মাসে দিল্লিতে এত বৃষ্টি কখনও হয়নি। ৪০ বছরের নজির ভেঙে গিয়েছে রাজধানীতে।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে দিল্লিতে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। সারা রাত বৃষ্টি হওয়ার পর শনিবার সকালেও আবহাওয়ার কোনও পরিবর্তন হয়নি। ফলে সকাল থেকেই রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। শনিবার বৃষ্টি থামার পরিবর্তে তার তীব্রতা আরও বাড়ে। শহরের নানা প্রান্তে ১৫টি বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর মিলেছে।
কারোল বাগ এলাকার টিবিয়া কলেজ সোসাইটিতে একটি বড়সড় দেওয়াল ধসে পড়ে বৃষ্টির জেরে। তার নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ার। মৃতের নাম রঞ্জিৎ কউর (৫৮)। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা।
দেশবন্ধু কলেজের পিছন দিকের দেওয়ালও শনিবারের বৃষ্টিতে ধসে গিয়েছে। ওই দেওয়ালের পাশে অনেক গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। ১৫টি বিলাসবহুল গাড়ি এবং ১০ থেকে ১২টি বাইক ও স্কুটার দেওয়ালের নীচে চাপা পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাস্তায় রাস্তায় জল জমে থাকার কারণে শনিবার সারা দিন দিল্লিতে তীব্র যানজট দেখা দেয়। কোথাও কোমর পর্যন্ত জল, তো কোথাও হাঁটুজল জমে ছিল। সমাজমাধ্যমে তার একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সকাল থেকেই। দেখা যায়, জল ঠেঙিয়েই কোনও রকমে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। জমা জলে ডুবে আটকে গিয়েছে গাড়ি। কোনও কোনও আন্ডারপাসের নীচে জলের পরিমাণ এতই বেশি হয়েছিল যে, পুলিশের তরফে ব্যারিকেড করে সেই রাস্তা বন্ধ করে দিতে হয়।
এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে সরকারি কর্মীদের সপ্তাহান্তের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকারি কর্মীদের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মৌসম ভবন শনিবার জানিয়েছে, আগামী দুই থেকে তিন দিন দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের অধিকাংশ এলাকায় ভারী বৃষ্টি হবে। তার পর বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমতে পারে। তবে বৃষ্টির কারণে ভ্যাপসা গরমের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে রাজধানী। গত দু’দিনে তাপমাত্রা বেশ খানিকটা কমেছে।