Manipur: এখনও ফেরেনি শান্তি! স্কুলের বাইরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু মহিলার…

সবে স্কুল খুলেছে, কিন্তু সদ্য-শান্ত মণিপুরেই ফের রক্তপাত! একটি স্কুলের বাইরেই নিহত হলেন এক মহিলা। মণিপুরে ইম্ফলের পশ্চিমে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে শিশু নিষ্ঠা নিকেতন স্কুলের বাইরে। গত দুমাস ধরে মণিপুর অশান্ত, আগুন জ্বলছে সেখানে। এরই মধ্যে পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে আসায় বুধবার খুলেছিল স্কুল। কিন্তু ফের বৃহস্পতিবার এমন মর্মান্তিক ঘটনা সেখানে আতঙ্ক বহুগুণ বাড়িয়ে দিল। যিনি গুলি চালিয়েছেন এবং যাঁকে গুলি করা হয়েছে– উভয়েরই কোনও পরিচয় মেলেনি। 

গত সোমবার স্কুল খোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। সেইমতো বুধবারই প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য খোলা হয় স্কুল। অশান্ত রাজ্যের প্রথমদিনটিতে স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ছিল বেশ কম। যদিও স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন অভিভাবকেরা। কিন্তু দেখা গেল, মণিপুর আছে মণিপুরেতেই। স্কুল খোলার দ্বিতীয় দিনেই সেখানে আবার চলল গুলি।

বিজেপিশাসিত মণিপুরের অশান্তি নিয়ে তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছে বেশ কয়েকটি বিরোধীদল। মণিপুর-পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের সঙ্গে বৈঠক হয় অমিত শাহের। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। বিরোধীদের একের পর এক আক্রমণের মুখে পড়ে অমিত শাহ সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতেও বাধ্য হয়েছেন। মণিপুরে যান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কিন্তু কোনও কিছুর ফলেই শান্তি ফেরেনি অশান্ত এই রাজ্যে।

বহুদিন ধরে গোষ্ঠীহিংসায় জর্জরিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্য। এর মধ্যে চূড়াচাঁদপুরের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। দু’মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। হিংসা থামার কোনও লক্ষণই নেই। মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি এবং নাগা জনগোষ্ঠীর বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়াই মেইতেই সম্প্রদায়ের দাবি। মেইতেইরা মণিপুরের জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫৩ শতাংশ। এঁরা মূলত ইম্ফল উপত্যকাতেই থাকেন। নাগা আর কুকি’রা মণিপুরের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০ শতাংশ। এঁরাও মণিপুরের পাহাড়ি উপত্যকা অঞ্চলে থাকেন। মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্তর তালিকায় আনা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে কিছুদিন আগে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল মণিপুর হাইকোর্ট। এর পরেই নতুন করে উত্তপ্ত হয় এই রাজ্য। হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিবাদে চূড়াচাঁদপুর জেলার তোরবাঙে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মণিপুর’ (এটিএসইউএম) ‘আদিবাসী সংহতি পদযাত্রা’র ডাক দিয়েছিল। সেখান থেকেই হিংসার সূত্রপাত হয়। সেই সূত্রপাত-মুহূর্ত থেকেই মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এখনও পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন এই হিংসার বলি হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.