“ঘোষণা নয় উন্নয়নের সরকার চালান, বাজারে সবজির অগ্নিমূল্যের জন্য দায়ী তৃণমূল সরকারের ভ্রান্তনীতি,‌” সরব সুকান্ত সহ বিজেপি নেতৃত্ব

গত কয়েক সপ্তাহে রাজ্যে সবজির দাম আগুন। মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিস্থিতি। কাঁচা লঙ্কা, টমেটোর মতো একাধিক সবজির দাম সেঞ্চুরি পেরিয়ে ডবল ট্রিপল সেঞ্চুরি পর্যন্ত করে ফেলেছে। বেশিরভাগ সবজির দাম ৫০-৬০ টাকার ওপর। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে তৃণমূল সরকার পদক্ষেপ করলেও তাতে স্থায়ী সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের ভ্রান্ত নীতির জন্যেই রাজ্যের মানুষের এই দুর্ভোগ।

বালুরঘাট থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিজেপি নেতা অশোক লাহেড়ি যৌথ ভাবে একটি প্রেস বিবৃতিতে লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েক সপ্তাহে সবজির মূল্য দেড় থেকে তিনগুণ বেড়েছে। যার ফলে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তাঁদের দাবি, এই মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা হয়েছে পূর্ববর্তী কয়েক সপ্তাহে প্রচন্ড গরমের জন্য এবং বৃষ্টির অভাবে। কিন্তু কৃষিতে এই আবহাওয়ার প্রভাবের প্রচণ্ড প্রকোপের জন্য দায়ী তৃণমূল সরকারের ভ্রান্ত নীতি।

বিজেপি নেতৃত্বের মতে, তৃণমূল সরকার সেচের ওপর গুরুত্ব দেয়নি। জলের আপেক্ষিক সহজ প্রাপ্যতা সত্ত্বেও সেচের ব্যবস্থা নেই। তার ফলে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির ওপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল কৃষকরা। তাদের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে কৃষির উৎপাদনশীলতা অন্যান্য রাজ্যের থেকে কম। এরাজ্যের সবজির প্রয়োজন মেটে অন্যান্য রাজ্যের যোগান থেকে।

এগ্রিকালচার মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট বা কৃষি বিপণন বিভাগ ভর্তুকি দিয়ে সুফল বাংলার বিপণনীর মাধ্যমে তৃণমূল সরকার সপ্তাহে সবজি বিক্রির যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, সুফল বাংলার ৪৮০ টি বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে এবং সরকার আরো ৫০ থেকে ৮০টি দোকান খোলার কথা বলেছেন। এই দোকানের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাদের আরো দাবি, সরকারি তহবিলের যে করুন অবস্থা ভর্তুকির অর্থ কোথা থেকে আসবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।

মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাজারগুলি পরিদর্শন করে জেনেছেন যে ক্ষুদ্র বাজারে যে দামে ক্রেতাদের কাছে সবজি বিক্রি হয়, আর যে দাম কৃষকরা পান তার মধ্যে পার্থক্য আছে। এবং উনি সবজি কালোবাজারি রুখতে পুলিশ ও আমলাদের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সুকান্তবাবুদের দাবি, এই ধরনের নির্দেশ বহু পুরনো ওষুধ। রাজনৈতিকভাবে লোভনীয়। এই ওষুধে সাময়িক কাজ হতে পারে, কিন্তু প্রশাসন ও শাসক দলের নেতাদের দুর্নীতি বাড়ে। সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হয় না।

কটাক্ষ করে তারা বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেনো ঘোষণা সরকার না চালিয়ে উন্নয়নের সরকার চালান। পশ্চিমবঙ্গের কৃষিতে যে মৌলিক সমস্যাগুলি রয়েছে তার সমাধান করুক। সরকারের ফিসকাল ক্রাইসিস বা আর্থিক সংকট কাটিয়ে এই ধরনের দুর্যোগ ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.