পাইকারি দামেই এ বার ডাবল সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় লঙ্কা, ছেঁকা খুচরো বাজারে, নাজেহাল মধ্যবিত্ত

আজ কিছুটা কম, তো কাল মারাত্মক বেশি। লঙ্কার দাম যেন ওঠানামা করছে শেয়ার বাজারের মতো। কোলে মার্কেটে মঙ্গলবার পাঁচ কেজি লঙ্কার পাইকারি দাম ছিল ৪০০ টাকা। এক দিনে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০০ টাকায়। আর সেখানে দাম বেশি থাকায় বুধবার খুচরো বাজারে লঙ্কা বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দামে। এ দিন সকালে ভিআইপি বাজার ও মানিকতলা বাজারে যান আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণকারী টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা। সঙ্গে ছিলেন এনফোর্সমেন্ট শাখার আধিকারিকেরাও। টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে জানান, এ দিন ভিআইপি বাজারে ঘুরতে ঘুরতে তাঁরা খবর পান, মানিকতলা বাজারে লঙ্কা বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা কেজি দরে। লঙ্কার দাম একটু কমেও ফের কেন বাড়ল? বিষয়টি জানতে তাঁরা ছোটেন মানিকতলা বাজারে। রবীন্দ্রনাথ জানান, মানিকতলার বিক্রেতারা তাঁদের জানান, কোলে মার্কেটে পাঁচ কেজি লঙ্কার পাইকারি দাম উঠেছে ৯০০ টাকায়। অর্থাৎ, ১৮০ টাকা কেজি। তাই খুচরো বাজারে লঙ্কার দাম ফের বেড়ে গিয়েছে। দোকানিরা এ-ও জানান, মঙ্গলবারই কোলে মার্কেটে লঙ্কার পাইকারি দর ছিল ৪০০ টাকা। তাই খুচরো বাজারে দাম হয় ১০০-১২০ টাকা।

টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা তখন ছোটেন কোলে মার্কেটে। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘খবর নিয়ে জানলাম, এ দিন লঙ্কার গাড়ি কম এসেছে। জোগান কম বলেই বেড়ে গিয়েছে দাম। আরও জানলাম, মঙ্গলবার কোলে মার্কেটে লঙ্কার গাড়ি বেশি চলে আসায় লঙ্কার পাইকারি দাম পড়ে গিয়েছিল। ফলে ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা নাকি প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা মতো লোকসান করেছেন। সেই জন্যই এ দিন লঙ্কার গাড়ি কম ঢুকেছে শহরে। রাজ্যের সীমানায় বহু গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।’’

এনফোর্সমেন্ট শাখার এক আধিকারিক জানান, এখন বেলডাঙার লঙ্কার জোগান নেই বললেই চলে। শহরে লঙ্কার বেশির ভাগটাই আসে কর্নাটক, দিল্লি এবং রাঁচী থেকে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাংলাদেশেও লঙ্কার উৎপাদন এ বার কম হয়েছে। তাই দিল্লি, কর্নাটকের প্রচুর লঙ্কা বাংলাদেশেও গিয়েছে। লঙ্কার যে সমস্ত গাড়ি রাজ্যের সীমানায় দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলি এ বার শহরে ঢুকবে। তাই কাল-পরশু নাগাদ শহরে লঙ্কার জোগান আবার স্বাভাবিক হবে। দামও কমবে। তবে, মঙ্গলবার যাঁরা ৪০০ টাকার পাইকারি দরে লঙ্কা কিনে রেখেছিলেন, তাঁরা এ দিন ১০০-১২০ টাকা কেজি দরেই তা বিক্রি করেছেন।’’ সূত্রের খবর, বুধবার সরকারি দোকান ‘সুফল বাংলা’ও লঙ্কা বিক্রি করেছে বেশ চড়া দামে। রবীন্দ্রনাথ জানান, পাইকারি বাচারে মূল্যবৃদ্ধিই এর কারণ।

অন্যান্য আনাজের দাম একটু কমেছে বলেই দাবি টাস্ক ফোর্সের। যদিও এখনও বেশ কিছু আনাজের দাম চড়া। এ দিনও খুচরো বাজারে টোম্যাটোর দাম ছিল ১০০ টাকার বেশি। বেগুন, ঢেঁড়স, উচ্ছে, পটলের দামও ছিল বেশ চড়া। কিছু আনাজ সেঞ্চুরি পার করেছে। কিছু আনাজ সেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। কবে দাম নাগালে আসবে? টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা দাবি করলেন, আরও দিন দশেকের মধ্যে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এক সদস্য কমল দে জানান, গরমে যে সব আনাজ মাঠেই শুকিয়ে যাচ্ছিল, বৃষ্টিতে সেগুলি ফের চাঙ্গা হলেই দাম কমবে। অন্য দিকে, ভোটের জন্য গ্রামের বহু মানুষ ভোটের প্রচারে ব্যস্ত। তাই ফসল ফললেও জমি থেকে তোলা হচ্ছে না। কমল বলেন, ‘‘বৃষ্টি ঠিকঠাকই হচ্ছে। ভোট না থাকলে এই সপ্তাহেই দাম কমত।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.