সাত সকালেই কলকাতার আকাশে যুদ্ধ। এক যুদ্ধবিমান তাড়া করছে আর এক যুদ্ধবিমানকে। তাও আবার একেবারে ব্যস্ত সময়। যুদ্ধবিমানগুলি উড়ল দমদ বিমানবন্দর থেকে। আসলে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে কীভাবে তার মোকাবিলা করা হবে কলকাতা, তারই মহড়া চলল এদিন।
বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার আকাশে সেই যুদ্ধের মহড়া চালিয়েছে বায়ুসেনা। বুধবারই কলকাতায় তিনটি যুদ্ধবিমান আনা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে দমদম এয়ারপোর্ট থেকে ওড়ে বিমানগুলি। ঠিক যে সময়ে অন্যান্য বিমান ওড়ে এই বিমানবন্দর থেকে, তখনই এই মহড়া চালানো হয়। যে কোনও পরিস্থিতিতে শত্রুদের মোকাবিলা কতটা করা সম্ভব, সেটা দেখতেই এই মহড়া চলে।
এয়ার ফোর্সের ‘ইস্টার্ন এয়ার কমান্ড’ এই মহড়া চালাচ্ছে একাধিক অঞ্চলে। মূলত জঙ্গি হামলা হলে ব্যস্ত এয়ারফিল্ড থেকে কীভাবে অপারেশন চালানো হবে, সেটাই ঝালিয়ে নেওয়া হচ্ছে এই মহড়ায়। সাধারণ মানুষকে কীভাবে সাহায্য করবে বায়ুসেনা, সেটাও পরখ করে দেখা হবে।
যেসব এয়ারপোর্টে এই এক্সারসাইজ চলবে, সেগুলি হল- ডিমাপুর (অরুণাচল প্রদেশ), পাসিঘাট (অরুণাচল প্রদেশ), ইম্ফল (মনিপুর), গুয়াহাটি (অসম), কলকাতা (পশ্চিমবঙ্গ), অন্ডাল (পশ্চিমবঙ্গ)। এইসব এয়ারপোর্ট থেকে ওড়ানো হবে সুখোই-৩০ এমকেআই, হক এমকে ১৩২ -র মত এয়ারক্রাফট।
ইস্টার্ন এয়ার কমান্ডের উইং কমান্ডের মুখপাত্র রত্নাকর সিং জানিয়েছেন, দুটি বিভাগে ভাগ করে হবে এই এক্সারসাইজ। প্রথম পর্যায়ে মহড়া চলবে ১৬ থেকে ১৯ অক্টোবর, দ্বিতীয় পর্যায়ের ২৯ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর। অসামরিক বিমান সংস্থাগুগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কীভাবে এইসব এয়ারপোর্ট থেকে জঙ্গি হামলার মোকাবিলা করবে, সেটা এই মহড়ায় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।
চিনের কথা মাথায় রেখে পূর্ব অংশে সতর্কতা বাড়াচ্ছে এয়ারফোর্স। তাই একদিকে বেছে নেওয়া হয়েছে কলকাতা, গুয়াহাটি ও ইম্ফল-কে। যেসব শহরের সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার যোগাযোগ রয়েছে। আর আছে ডিমাপুর, পাসিঘাট ও অন্ডালের মত অপেক্ষাকৃত ছোট এয়ারপোর্ট।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তৈরি হয়েছিল ডিমাপুর এয়ারপোর্ট। বর্তমানে সেখান থেকে অসামরিক বিমান চলাচল করে। পাসিঘাট তৈরি হয় ১৯৬২-তে ভারত-চিন যুদ্ধের সময়। পরে ২০০৯-এ এই এয়ারস্ট্রিপ নতুন করে তৈরি করা হয়। আর অন্ডালের কাজী নজরুল ইসলাম এয়ারপোর্ট চালু হয় ২০১৩ থেকে।