হিমাচল প্রদেশের হিড়িম্বা মন্দিরের গল্প। সেখানে পূজিতা হন একজন রাক্ষসী। ভাবলে হয়ত একটু অবাক হতে হয়। কিন্তু কেন? এবার তারই খোঁজে। হিমাচলের সাজানো শহর মানালি। মানালি শহর থেকে দু’কিমি দূরে এই হিড়িম্বা মন্দির।
হিড়িম্বা মন্দিরের আগে হিড়িম্বা রাক্ষসীর সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক। মহাভারতের বারণাবত। পাণ্ডবদের পুড়িয়ে মারার প্রচেষ্টা করলেন দুর্যোধন, বিদুরের সহায়তায় পাণ্ডবরা গেলেন পালিয়ে। সে সময় তাঁরা এক বনে প্রবেশ করেছিলেন, যেখানে বাস ছিল রাক্ষস হিড়িম্ব এবং তাঁর বোন হিড়িম্বার। এদিকে হিড়িম্ব খবর পেলেন জঙ্গলে মানুষ এসেছে। তারই সন্ধানে হিড়িম্ব পাঠালেন বোনকে। এদিকে হিড়িম্বা রাক্ষসী সুন্দরী নারীর রূপ ধারণ করলেন কিন্তু মধ্যম পাণ্ডব ভীমকে দেখে প্রেমে পড়ে গেলেন। বিয়ে করতে চাইলেন। এদিকে বোনের দেরি দেখে হিড়িম্ব উপস্থিত হলেন সেখানে, বোনকে এহেন আচরণ করতে দেখে তাঁকে মারতে উদ্যোগী হলে ভীম তাঁকে বধ করলেন। কিন্তু ভীম হিড়িম্বাকে কোনোভাবেই বিবাহ করতে রাজি হলেন না। হিড়িম্বা আত্মহত্যা করতে গেলে অবশেষে কুন্তির অনুরোধে বিবাহ হল। পরে ভীম ও হিড়িম্বার এক বিদ্বান পুত্রসন্তানও হয়। নাম ঘটোৎকচ।
প্যাগোডা আকৃতির হিড়িম্বা মন্দির। চারতলা। আনুমানিক চারশো বছরের পুরানো। বর্তমান মন্দিরটি ষোড়শ শতকে রাজা বাহাদুর সিং এর আমলে নির্মিত। মন্দিরে রয়েছে হিড়িম্বার পায়ের ছাপ। পাশেই রয়েছে ভীম ও ঘটোৎকচের মন্দির। মন্দির চত্বরে রয়েছে অসংখ্য চমরি গাই।
মন্দির পুরোহিত জানান, কাঠের মূল মন্দির একবার আগুনে পুড়ে যায়। অবশ্য তার থেকেও রোহমর্ষক একটি গল্প শোনা গেল। প্রথম যে শিল্পী এই মন্দির বানিয়েছিলেন সেটি নাকি এত অপূর্ব ছিল যে তিনি যেন এই ধরনের মন্দির আর বানাতে না পারেন সে কারণে শিল্পীর ডান হাত কেটে নেন রাজা। কিন্তু জেদি শিল্পী বাম হাত দিয়ে চাম্বায় বানান ত্রিলোকনাথের মন্দির।