মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার জল্পনাকে খারিজ করে দিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। রবিবার তাঁকে দিল্লিতে আলোচনার জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকের পর একটি টুইট করে তিনি জানান, মণিপুরের পরিস্থিতি সামলাতে ‘সক্ষম’ কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে বীরেন এ-ও জানান যে, ১৩ জুন থেকে সে রাজ্যের হিংসায় কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
বীরেন সিংহের নেতৃত্বাধীন সরকার মণিপুরের জনগণের আস্থা হারিয়েছে— বিরোধী দলগুলির একাংশের তরফে বার বার এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করারও দাবি উঠেছে। যদিও শনিবারের সর্বদলীয় বৈঠকে রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারির সম্ভাবনার বিষয়টি খারিজ করে দেন শাহ। বরং রাজ্যের বিজেপি সরকারের উপরেই আস্থা রাখার উপরে জোর দেন তিনি। রবিবারের বৈঠক প্রসঙ্গে বীরেন টুইটে লেখেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন, রাজ্যে শান্তিপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশে আমরা যেন আমাদের কাজকে আরও শক্তিশালী করি।”
অন্য দিকে, নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মণিপুর সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে আরও পাঁচ দিন, আগামী ৩০ জুন, বিকেল ৩টে পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে। শনিবার সারা দিন মণিপুরের নানা প্রান্তে জনতার সঙ্গে সেনার সংঘর্ষ চলেছে। যে জনতার সামনের সারিতে ছিলেন মহিলারা। এক জায়গায় সেনাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় বন্দিদের মুক্তির দাবিতে। কিছুতেই তাদের এগোতে দেওয়া হচ্ছিল না। তার পরেই বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে গোষ্ঠীর সদস্যদের ছেড়ে দিতে হয়েছে, তাঁরা ২০১৫ সালে ৬ ডোগরা ইউনিটের হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁদের ধরার চেষ্টা চলছিল।
মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বিক্ষোভে মহিলাদের ভূমিকা আলাদা করে নজর কাড়ছে বার বার। এর আগে মহিলাদের প্রতিরোধের মুখে কখনও আটকে পড়েছে সেনাবাহিনীর গাড়ি, কখনও ফিরে আসতে হয়েছে সিবিআইয়ের তদন্তকারী দলকে। সেনার গাড়ির সামনে কয়েকশো মহিলা বসে পড়ে তাদের আটকে দিয়েছে কিছু দিন আগেই। অস্ত্র লুটের তদন্তে যাওয়া সিবিআইয়ের দলকে একই ভাবে মণিপুর পুলিশ ট্রেনিং কলেজে ঢুকতে দেননি প্রায় দু’হাজার মহিলা।