আমেরিকার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে নাম না-করে চিন ও পাকিস্তানকে বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে তিনি বিশ্বকে বার্তা দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে মানবতার শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। পাশাপাশি, রাশিয়ার নাম উল্লেখ না করেও কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
যৌথ অধিবেশনে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে সরব হন মোদী। তাঁর কথায়, “এই অঞ্চলকে ঘিরে তৈরি হয়েছে সংঘাত ও বলপ্রয়োগের মেঘ। এখানের সুস্থিতি আমাদের সম্পর্কের মূল উদ্বেগগুলির মধ্যে একটি। এই অঞ্চলে উন্মুক্ত, উদার, আন্তর্জাতিক আইনের শাসন মানা, সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলায় আমরা বিশ্বাস করি, আমেরিকাও করে। কারও একচেটিয়া আধিপত্যকে আমরা স্বীকার করি না।’’ একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আসিয়ানভুক্ত দেশগুলিকেই ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কেন্দ্রে রাখতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘এমন একটি অঞ্চল এখানে গড়ে তোলা প্রয়োজন যেখানে সব রাষ্ট্র নির্ভয়ে নিজেদের পছন্দ জানাতে পারবে। যেখানে প্রগতির জন্য অস্বাভাবিক পর্যায়ে ঋণগ্রস্ত হতে হবে না। যেখানে সংযোগের বিনিময়ে কারও কৌশলগত দাসত্ব মেনে নিতে হবে না। যেখানে সমস্ত দেশই সমৃদ্ধি ভাগ করে নিতে পারবে।” কূটনৈতিক শিবিরের মতে, কোয়াডভুক্ত আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের সাধারণ লক্ষ্যের দিকটিকেই তাঁর বক্তৃতায় তুলে ধরেছেন মোদী। কোয়াড প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “এই চতুর্দেশীয় অক্ষ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কল্যাণের জন্যই তৈরি হয়েছে।”
চিনের পাশাপাশি, পাকিস্তানকে নিশানা করে মোদীর বক্তব্য, “৯/১১-র পরে দুই দশক এবং মুম্বইয়ে ২৬/১১-র পরে এক দশকেরও বেশি কেটে গিয়েছে। মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদ এখনও বিশ্বের কাছে বিরাট বিপদ। এই মতাদর্শগুলি নতুন রূপ ধরছে। কিন্তু উদ্দেশ্য এক। সন্ত্রাসবাদ মানবসভ্যতার শত্রু। তার মোকাবিলা করতে দ্বিধা থাকা উচিত নয়।”
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে মোদীর বক্তব্য, এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গরিব এবং উন্নয়নশীল দেশগুলি। তাঁর কথায়, “আমি প্রকাশ্যে ও সরাসরি বলেছি এই সময় যুদ্ধের নয়। সংলাপ ও কূটনীতির সময়। মানুষের যন্ত্রণা কমাতে আমরা সকলে যতটুকু পারব, করব।”