“অনুব্রত না থাকলেও সিস্টেমটা তো আছেই”, কেষ্টহীন বীরভূমে হাজার আসনে তৃণমূলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় প্রসঙ্গে বললেন সুকান্ত

 অনুব্রত কোনো ব্যক্তি নয়, অনুব্রত হচ্ছে একটা সিস্টেম। অনুব্রত বীরভূমে নেই, কিন্তু সেই সিস্টেমটা সেখানে থেকে গেছে। কেষ্টহীন বীরভূমে হাজারের বেশি আসনে তৃণমূলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় প্রসঙ্গে এমনটাই বললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

গরু পাচার মামলায় তিহার জেলে বন্দি রয়েছেন বীরভূমের কেষ্ট। নিজে এলাকায় না থাকলেও বীরভূমে রাজনৈতিকভাবে তৃণমূলের প্রভাব কিন্তু রয়েই গেছে। পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্ব মিটে যাওয়ার পরই দেখা গেছে অনুব্রতর জেলায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে হাজারেরও বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করেছে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন,
অনুব্রত মণ্ডল থাকুক বা না থাকুক, তার সাঙ্গোপাঙ্গরা তো রয়েছেই। করিম খান, কাজল শেখরা এলাকাতেই রয়েছে। এদের তৈরি করা ভয়ের পরিবেশে তো কেউ ভোটে অংশগ্রহণই করতে পারে না। তাঁর কথায়, “অনুব্রত কোনো ব্যক্তি নয়, অনুব্রত হচ্ছে একটা সিস্টেম। অনুব্রত সেখানে নেই, কিন্তু সেই সিস্টেমটা সেখানে থেকে গেছে। সেখানে করিম খান কাজল শেখ রয়েছে। অনুব্রতর হয়ে তারাই সবটা চালাচ্ছে এখন। এরপরই তিনি কটাক্ষ করে বলেন, এটাই যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গণতন্ত্র হয় উনি ভোটে জিতে আনন্দে থাকুন।

অনুব্রতর গ্রেপ্তারের পর বীরভূমের দায়িত্ব নিজে নিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তৃণমূলের কোর কমিটি নিজে হাতে গঠন করেছিলেন। সেখানে নানুরে তৃণমূল নেতা কাজল শেখকে রেখেছিলেন তিনি। আর কাজলের বক্তব্য ছিল, অনুব্রতই তার রাজনৈতিক গুরু।

তবে অনুব্রত মণ্ডল এলাকায় থাকাকালীন বীরভূমে তৃণমূলে যে জয়ের ধারা দেখা গিয়েছিল, তা কিছুটা হলেও থমকেছে। ২০১৮ সালের বীরভূম জেলা পরিষদে আসন ছিল ৪২টি। তৃণমূল সব আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছিল। ওই বছরই পঞ্চায়েত সমিতিতেও প্রায় সব আসনই দখল করে শাসক দল। বিরোধীদের মতে গতবারের নির্বাচনে বীরভূমে ৯৩% আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তৃণমূল।

এবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পঞ্চায়েত স্তরে ২৮৫৯ টি আসনের মধ্যে ৮৯৯ টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৯০ টির মধ্যে ১২৭ টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল ও জেলা পরিষদের ৫২ টির মধ্যে মাত্র একটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল।

বীরভূমের বিজেপি জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেছেন, “তৃণমূল মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে। বিরোধী প্রার্থীদের যে কয়েকটি আসনে নির্বাচন হচ্ছে সব জায়গায় প্রার্থীদের আমরা কোনোভাবে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে এসে রক্ষা করেছি। ২০১৮-র নির্বাচনের পর লোকসভা ভোটে তৃণমূল জুলুম করার ফল পেয়েছিল। এবারেও সাধারণ মানুষ এর জবাব দেবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.