টাইটানিক দর্শনে মহাসাগরে ডুবে নিখোঁজ পর্যটকবাহী টাইটান, প্রায় ১২ ঘণ্টা পরেও হদিস নেই

প্রায় ১১১ বছর আগে হিমশৈলে ধাক্কা মেরে অতলান্তিকে ডুবে গিয়েছিল ‘টাইটানিক’। মহাসাগরের প্রায় সাড়ে চার হাজার মিটার নীচে এখনও রয়েছে তার ধ্বংসাবশেষ। একটি পর্যটন সংস্থা টাইটানিকের সেই ধ্বংসাবশেষই দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল পর্যটকদের। ট্রাকের আকারের একটু ডুবোযানে করে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হয় অতলান্তিকের অতলে। কিন্তু সেই ডুবোযান ‘টাইটান’ও নিখোঁজ হয়ে গেল অতলান্তিকে। সর্বাধিক পাঁচ জনকে নিয়ে যাতায়াত করতে পারা ওই ডুবোযানটিতে নিখোঁজ হওয়ার সময় কত জন পর্যটক ছিলেন, তা যদিও এখনও স্পষ্ট নয়। প্রায় ১২ ঘণ্টা পরও ওই ডুবোযানটির কোনও খবর নেই।

সংবাদ মাধ্যম বিবিসি সূত্রে খবর, টাইটানিক দেখতে যাওয়ার ওই যাত্রা ছিল মোট আট দিনের। টাইটান নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জন’স থেকে যাত্রা শুরু করে। সেখান থেকে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে। পর্যটক প্রতি টিকিটের দাম ভারতীয় মুদ্রায় দু’কোটিরও বেশি! পর্যটন সংস্থার দাবি, যানটির ভিতরে পাঁচ জন যাত্রীর চার দিন চলার মতো অক্সিজেন মজুত ছিল। নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন ৫৯ বছর বয়সি ব্রিটিশ কোটিপতি ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং। গত রবিবারই সমাজমাধ্যমে তিনি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। পর্যটন সংস্থার তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সকল যাত্রীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমেরিকান উপকূল রক্ষীবাহিনী ওই ডুবোযানটির সন্ধান চালাচ্ছে।

ওই পর্যটন সংস্থার ওয়েবসাইট বলছে, ২০২৪ সালে আরও দু’বার টাইটানিক দর্শনে নিয়ে যাবে তারা। কার্বন-ফাইবার ডুবোযানে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেকে চাক্ষুস করার আট দিনের এই যাত্রা প্রসঙ্গে ওয়েবসাইটে লেখা রয়েছে, ‘‘দৈনন্দিন জীবনের বাইরে পা রাখার পাশাপাশি অসাধারণ কিছু আবিষ্কারের সুযোগ।”

১৯১২ সালে ১৫ এপ্রিল সাউদাম্পটন যাত্রা শুরু করে টাইটানিক। যাওয়ার কথা ছিল নিউইয়র্ক। কিন্তু প্রথম যাত্রাতেই সে একটি হিমশৈলে ধাক্কা মারে। জাহাজে থাকা ২,২০০ জন যাত্রী-কর্মীদের মধ্যে ১,৫০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষটি দু’টি ভাগে অতলান্তিকের প্রায় চার হাজার মিটার নীচে রয়েছে। ১৯৮৫ সালে ওই ধ্বংসাবশেষ প্রথম খুঁজে পাওয়া যায়। তার পর থেকে বহু সংস্থা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে গবেষণাও করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.