সরকারিভাবে এখনও রাজ্যাভিষেক হয়নি। তবে ছবিটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বোর্ডের মসনদে বসার আগেই প্রাথমিক কর্তব্য নির্ধারণ করলেন মহারাজ। দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনদিকে প্রথম নজর দেবেন, কোনও রাখঢাক না করে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
ক্রিকেট প্রশাসন হাত পাকালেও বোর্ড রাজনীতিতে নিতান্ত নবাগত সৌরভ। সিএবি’র হয়ে বিসিসিআই-এর সভায় প্রতিনিধিত্ব করলেও কখনও ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের কর্তার পদে ছিলেন না। নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সৌরভের সামনে দরজা খুলে যায় বোর্ড কর্তা হওয়ার। তবে সরাসরি প্রেসিডেন্ট পদে প্রথম পছন্দ হয়ে উঠবেন, এমনটা আশা করেননি মহারাজ নিজেও।
বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে প্রাথমিকভাবে এগিয়ে ছিলেন ব্রিজেশ প্যাটেল। তবে বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ছবিটা বদলে যায়। সৌরভ হয়ে ওঠেন প্রথম পছন্দ। সেই মতো মনোনয়ন জমা দেন তিনি। তাঁকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার মানসিকতা শ্রীনি শিবির না দেখানোয় সৌরভের বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হওয়া কেবল সময়ের অপেক্ষা।
সরকারিভাবে এখনও ঘোষণা না হলেও তিনিই যে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সিংহাসনে বসছেন, সেটা বুঝে গিয়েছেন দাদা। তাই ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন অধ্যায়কে কিভাবে উজ্জ্বল করে রাখবেন তার পরিকল্পনা আগে থেকেই ছকে রাখছেন সৌরভ। দায়িত্ব পাওয়ার পর নিজের প্রাথমিক কর্তব্য কী হবে, সে সম্পর্কে সৌরভ বলেন, ঘরোয়া ক্রিকেটারদের আর্থিক সংগতির দিকে নজর দেওয়াই হবে তাঁর প্রথম কাজ।
ভারতীয় ক্রিকেটে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক প্লেয়ারদের পারিশ্রমিকের মধ্যে বিস্তর ফারাক। ডোমেস্টিক ক্রিকেটে পেশাদারিত্ব আমদানি করতে হলে ক্রিকেটারদের পর্যাপ্ত পারিশ্রমিকের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে সৌরভের। তিন বছর আগেই এ প্রসঙ্গে কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের নজর কেড়েছিলেন সৌরভ। তবে তাতে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেননি বিনোদ রাইরা। বোর্ড সভাপতি হওয়ার পর সেই কাজটাই প্রথমে করতে চান সৌরভ।
তার কথায়, ‘কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সবার সঙ্গে অবশ্যই আলোচনা করে নেব। তবে আমার প্রথম কাজ হবে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটারদের দিকে নজর দেওয়া। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে সিওএ’কে অনুরোধ করে এসেছি। তাঁরা বিষয়টায় কান দেননি। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটারদের আর্থিক দিকটাতেই প্রথমে নজর দিতে চাই।’
সৌরভ আরও বলেন যে, প্রতিদ্বন্দিতায় অথবা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায়, যেভাবেই হোক না কেন বোর্ড সভাপতি হয়ে গত কয়েক বছর ধরে বিসিসিআই-এর হৃত সম্মানটা পুনরুদ্ধার করাই হবে তাঁর অন্যতম কাজ। বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী ক্রিকেট বোর্ডের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জটা তিনি গ্রহণ করছেন বলে জানান মহারাজ।