আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দেশের গোপন নথি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতে মুখবন্ধ খামে জমা পড়া সেই অভিযোগপত্র এ বার প্রকাশ্যে আনলেন এই মামলার আইনজীবী। ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত, পরমাণু গবেষণা সংক্রান্ত প্রায় ১০০টি নথি নিজের ফ্লরিডার বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন ট্রাম্প! দেশের প্রাক্তন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দাখিল করা ৪৯ পাতার চার্জশিটের ভিত্তিতেই শুরু হয়েছে তদন্ত।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে ৩৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে ৩১টির মূল বিষয়ই হল, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এবং গোপন নথি নিজের কাছে’ রেখে দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দেশের তথ্য চুরির অভিযোগ এনেছিলেন যে আইনজীবী, তিনি এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “দেশের গোপন তথ্য সঠিক ভাবে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য আইন আছে। আশা করব সেগুলো প্রয়োগ করা হবে।” একই সঙ্গে তিনি আশা করেছেন, ট্রাম্পের বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে।
এই মামলায় উঠে এসেছে তাঁর সহকারী ওয়াল্ট নওটার প্রসঙ্গও। অভিযোগ, ফ্লরিডার বাড়ির অন্তত ৬টি জায়গায় এই সব গোপন নথি লুকিয়ে রাখতে ট্রাম্পকে সাহায্য করেছেন তিনি। এমনকি শৌচাগারেও নাকি সেই সব নথি লুকিয়ে রাখা হয়েছে। মাঝেমধ্যেই নিজের বাড়িতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ট্রাম্প। সেখানে অতিথি-অভ্যাগতরা আসেন। সে ক্ষেত্রে দেশের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে জো বাইডেন প্রশাসন। এই মামলার শুনানিতে আগামী মঙ্গলবার মায়ামির আদালতে উপস্থিত হতে পারেন ট্রাম্প। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর সর্বোচ্চ ২০ বছরের সাজা হতে পারে।
এর আগে ট্রাম্প নিজেই সমাজমাধ্যমে এই জানিয়েছিলেন, এই মামলায় তাঁকে মূল অভিযুক্ত করা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ আনার জন্য তিনি আক্রমণ করেন বাইডেন প্রশাসনকেও। প্রাক্তন এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট লেখেন, “দুর্নীতিগ্রস্ত বাইডেন প্রশাসন আমার আইনজীবীকে জানিয়েছে, আমি নাকি এই মামলায় অভিযুক্ত হতে চলেছি।” এই মামলা সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের একাংশ জানিয়েছেন, ২০২০ সালে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক নথি আমেরিকার মহাফেজখানা থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। অভিযোগ, সেগুলো ট্রাম্প ফেরত দেননি। উল্টে এই নিয়ে তদন্ত শুরু হলে তদন্তপ্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ৭৭ বছর বয়সি ট্রাম্প ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হয়ে নামতে চলেছেন। এর আগে পর্নতারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলাতেও নাম জড়িয়েছিল ট্রাম্পের। এ বার আর এক আইনি বিড়ম্বনায় পড়তে চলেছেন আমেরিকার ‘বিতর্কিত’ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট।