আদিবাসীদের ২১ টি সংগঠনের ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধ রাস্তা অবরোধে পরিণত হল পুরুলিয়ায়। পুরুলিয়া শহরের কাছে ৩২ নম্বর জাতীয় সড়ক ও মানবাজার রাস্তার সংযোগস্থল ছাড়া হুড়ার লালপুর, কোটশিলা, আড়ষার আহাড়রা মোড়, বলরামপুর সহ জেলার বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ করে বনধ পালন করল আদিবাসী সংগঠনগুলি।
‘কুড়মি সম্প্রদায়কে এসটি তালিকাভুক্ত করা চলবে না’, এই দাবিকে সামনে রেখে ‘ইউনাইটেড ফোরাম অব অল আদিবাসী অর্গানাইজেশানস্ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ বাংলা বনধের ডাক দেয়। শিমুলিয়া গ্রামের কাছে টাটা- ধানবাদ ৩২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ স্থলে দাঁড়িয়ে ‘ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল’ নামে সংগঠনের পদাধিকারী রাজেশ্বর টুডু বলেন, “কুড়মিদের তপশিলি উপজাতি করার যে প্রক্রিয়ার উদ্যোগ রাজ্য সরকার নিয়েছে তারই প্রতিবাদে এই বনধ। যাদের কোনও যোগ্য মাপকাঠি নেই তাদের তপশিলি উপজাতি করার চেষ্টা কেন করা হচ্ছে। এছাড়া ইতিহাস বিকৃত করছে কুড়মিরা। হাইজ্যাক করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে এই বনধ।”
সড়ক অবরোধের জেরে রাস্তায় বেসরকারি বাস চলাচল খুবই কম করেছে। পূর্ব ঘোষিত হলেও কাজের দিনে সড়ক পরিবহন বিঘ্নিত হওয়ায় দুর্ভোগের পড়েন মানুষ। পুরুলিয়া শহরের সঙ্গে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ট্রেন চলাচল ও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত যান বনধের আওতার বাইরে ছিল। ধামসা মাদল নিয়ে বনধ সফল করতে সকাল থেকেই পথ অবরোধে অংশ নেন বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের সদস্যরা। পুরুলিয়া শহর ও ব্লক সদরে দোকান পাট খোলা ছিল। হাট বাজার খোলা ছিল। তবে, ক্রেতাদের সংখ্যা ছিল অন্যদিনের থেকে কম।
এদিকে, আজকের বনধের মূল দাবি ছিল কুড়মিদের তপশিলি উপজাতি করার প্রচেষ্টার বিরোধিতা করা। এর তীব্র প্রতিবাদ জানান, আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাতো। তিনি বলেন, “আমরা তপশিলি উপজাতিই। সাংবিধানিকভাবে এর স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন বহু দিনের। মাঝি, সাঁওতাল আমরা একই। আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে দাঙ্গা লাগাতে চাইছে।”