উন্নাও কাণ্ডের কথা আশাকরি কেউ ভুলে যাননি। সাম্প্রতিক অতীতে উন্নাওয়ের সেই ধর্ষিতা কিশোরী তাঁর পরিবার, উকিল সমেত দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। কিশোরীর দুই পিসিমা ঘটনাস্থলেই মারা যান। উকিল ও কিশোরী মারাত্মকভাবে আহত হন। শরীরের অজস্র হাড় ভেঙে যায় তাঁর। বুকের খাঁচা ভেঙে তাঁর ফুসফুসে মারাত্মক চোট লাগে। মাথার আঘাতে বহদিন অচেতন ছিলেন তিনি। প্রাথমিক অবস্থায় বাঁচার কোনও আশা ছিল না। দিল্লি এইমসের চিকিৎসকদের নিরলস চেষ্টায়, চিকিৎসায় খানিকটা সুস্থ তিনি। তাতে অবশ্য তাঁর প্রাণসংশয় বিন্দুমাত্র কমে যায়নি।
আততায়ীর হাতে আক্রান্ত হবার আশংকায় উচ্চ আদালতে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশে ফিরে যেতে চাননি তাঁরা। ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধি করে উচ্চ আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। কিশোরী ও তাঁর পরিবার এখন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ঘেরাটোপে দিল্লিবাসী।
ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পাবার পর তাঁদের পরিবারের ওপর নেমে এসেছে মর্মান্তিক আঘাত, বারবার। কিশোরীর বাবা পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন মারা যান। তাঁর শরীরে অকথ্য অত্যাচারের চিহ্ন ছিল। কিশোরীর কাকাকে বিশ বছরের পুরোনো একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়, বিচারে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। জেল হয় তাঁর। কিশোরী ইতিমধ্যে হতাশায় রাজপথে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহননের চেষ্টা করেন। সংবাদমাধ্যমের নজর পড়ে ঘটনাটির ওপর। অভিযুক্ত এমএলএ কে হেফাজতে নিতে বাধ্য হয় পুলিশ।
এরপর সেই দুর্ঘটনা। কাকতালীয় ছিল এই ঘটনা? তদন্তের দায়িত্ব ইতিমধ্যে রাজ্য পুলিশের হাত থেকে সিবিআইয়ের হাতে গেছে। সিবিআই প্রাথমিকভাবে বাহুবলী এমএলএ এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে।
গতকাল লখনৌ আদালতে পেশ করা চার্জশিটে এমএলএ’র বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়েছে। কালান্তক ট্রাকটির ড্রাইভারের বিরুদ্ধে অনিয়ন্ত্রিত ড্রাইভিং ও অনিচ্ছাকৃত হত্যার মামলা দায়ের করেছে সিবিআই।
সত্যিই কি বিচিত্র এই দেশ!