আম মরশুমের মধ্যে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ফল বৈচিত্র্য মেলা। পূর্ব ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বড় আমের বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কেন্দ্রটি রয়েছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আগামীকাল অর্থাৎ ৭ই জুন ICAR-AICRP on Fruits বা সর্ব ভারতীয় সমন্বিত ফল গবেষণা প্রকল্পের মোহনপুরকেন্দ্রই এই মেলার আয়োজক।
প্রায় ৪০ জন ফলচাষী ও বাগানবিলাসী এই মেলায় অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে। প্রায় ৫০ টি প্রকরণের আম প্রদর্শিত হবে এই মেলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পদস্থ আধিকারিক ও শিক্ষাবিদরা উপস্থিত থাকবেন এই মেলায়। থাকছে প্রতিযোগিতার আসরও।
আটটি ক্যাটেগরিতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া যাবে। ক্যাটেগরিগুলি হচ্ছে ১) দেশী/স্থানীয়/লৌকিক জাত,
২) ভারতের অর্থকরী আমের জাত,
৩) সঙ্কর জাতের আম, ৪) বিদেশী জাতের আম,
৫)বহু মরশুমী বা দোফলা/বারমাসী আম, ৬) আমের প্রক্রিয়াজাত পণ্য,
৭) আম ব্যাতিরেকে অন্য ফল,
৮) আম ব্যাতিরেকে অন্য ফলের সংরক্ষিত পণ্য।
এই প্রকল্প ছয়টি ফলের উপর বিশেষ গবেষণা সম্পন্ন করে চলছে। আম, লিচু, পেয়ারা, কলা, কাঁঠাল এবং পেঁপে। তাছাড়াও ড্রাগন ফল, মুসুম্বিলেবুর সংহত বাগান এখানে রয়েছে। রয়েছে ৩৫ টি প্রজাতির গৌণ ফলের বিবিধ বৈচিত্র্যের বাগিচা। নদীয়া জেলায় অবস্থিত এই গবেষণা কেন্দ্র কৃষকদের কাছে একটি উৎসাহের নাম। এখানে উৎপাদিত ফল বৈচিত্র্যের ঝাঁপিও প্রদর্শিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প আধিকারিক অধ্যাপক দিলীপ কুমার মিশ্র। তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য যাবতীয় আয়োজন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী ICAR-এর তত্ত্বাবধানে আমরা গবেষণা কাজ চালাই। এই মেলা কৃষকদের সঙ্গে আমাদের সংযোগ বাড়িয়ে তোলে। কোন জাতটি কেন চাষ করবেন, সে বিষয়ে কৃষক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন, এই মেলায় এসে। ছাত্র ও গবেষকেরাও ফল বৈচিত্র্য বিষয়ে জ্ঞানলাভ করেন। এই মেলার জন্য আম চাষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বিশিষ্ট উদ্যানবিদ অধ্যাপক ড. কল্যাণ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “যারা এই ফল গবেষণা কেন্দ্রে পূর্বে প্রশিক্ষণ নিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন অথবা প্রেরণা নিয়ে ফলচাষ শুরু করেছেন তাদেরই বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিবিধ লৌকিক জাত আনার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা বাংলা থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে।”
৭ ই জুন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহনপুর ক্যাম্পাসে সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই মেলা। কৃষক, বাগানবিলাসী, ছাত্র শিক্ষক, গবেষক, আধিকারিক, সদর্থক জনতা সকলেই এই মেলায় স্বাগত, জানিয়েছেন প্রকল্পের বিজ্ঞানীরা।