ওড়িশার বালাসোরে গত ২রা জুন যা ঘটেছিল তা ছিলো কল্পনাতীতভাবে বিপর্যয়কর। দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রতি ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে বলে দাবি করা হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রীসহ অন্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেন।সেই বগিগুলোর অবশিষ্টাংশে সম্ভব হলে একটি প্রাণও বাঁচানোর উদ্দেশ্যে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে।
এইরকম ভয়ঙ্কর সময়ে, সংঘের স্বয়ংসেবকরাও দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে মানুষের সেবা করছেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (RSS) এবং অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (ABVP) এর এক হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা এবং স্বয়ংসেবক এই ঘটনার পর থেকে দিনরাত খেটে উদ্ধারকাজে সহায়তা করেছেন।
অর্গানাইজারের সাথে কথা বলার সময়, এরকমই একজন এবিভিপি কার্যকর্তা লক্ষ্মী বলেন, বালাসোর হাসপাতালে প্রায় ৬০০ কার্যকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে যাতে লোকেদের তাদের আত্মীয়স্বজন এবং পরিবারের সদস্যদের সনাক্ত করতে সহায়তা করা যায়। যারা তাদের ফোন হারিয়েছেন এবং নিজেদের পরিবারের সদস্যদের খুঁজছেন তাদের জন্য প্রায় শতাধিক কার্যকারতা টেলিফোন এবং মোবাইল সরবরাহ করছে।
বালাসোর হাসপাতালে প্রায় ২০০ কর্মকার্তা উপস্থিত রয়েছে, মৃতদেহ শনাক্ত করতে পরিবারকে সাহায্য করছে এবং মৃত পরিবারকে খাবার ও জল সরবরাহ করছে৷
তিনি আরও বলেন যে, শত শত প্রচারক ও খোদ প্রান্ত প্রধান বালাসোরে এসেছেন এবং ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযানে রেলের আধিকারিকদের সাহায্য করছেন। কিছু কর্মকর্তা এনডিআরএফ দলকেও সাহায্য করছেন বলে তিনি জানান।
বালাসোর হাসপাতাল ছাড়াও কর্মকার্তারা অ্যাম্বুলেন্স চালানো এবং হাসপাতালের ছেলেদের মৃতদেহ পাঠাতে সাহায্য করছে। তিনি আরও বলেন, শহরের অন্য হাসপাতালে এই কর্মীরা মৃতদেহ মর্গেও নিয়ে যাচ্ছে।
লক্ষ্মী বলেন যে প্রতিটি বাস স্টপে চৌকি ও স্কোয়ারে খাবার, জল‚ প্রাথমিক চিকিৎসা এবং মোবাইল ফোন নিয়ে কর্মরতরা উপস্থিত রয়েছে। তারা বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের তাদের যা যা ভাবে সাহায্য করতে পারে তার সবই করছে।
সংঘ এবং এবিভিপি বালাসোর তাদের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে লোকেদের সাহায্য করার জন্য হেল্পলাইন নম্বর জারি করেছে। তারা ব্লাড ব্যাঙ্ক এবং রক্ত সংগ্রহের জন্য নম্বরও জারি করেছে। গতকাল থেকে তারা রক্তদানের জন্য ২০০০ টি ফোন পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত তারা হাসপাতালে এক হাজার ইউনিট রক্ত সরবরাহ করেছে এবং আরও ব্যবহারের জন্য প্রায় ৭০০ ইউনিট রক্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য যে এটিই একমাত্র সংকট নয় যেখানে আরএসএস মানুষকে সাহায্য করতে এবং জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিল, এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। আরএসএস ভারত জুড়ে বিভিন্ন সহায়তা এবং ত্রাণ প্রচেষ্টায় জড়িত ছিল, বিশেষ করে বন্যা, ভূমিকম্প এবং কোভিড সংকটের মতো প্রয়োজনের সময়ে তাদের গুরুত্ব ছিলো অপরিসীম। কোভিড-১৯ সংকট, বন্যা, ভূমিকম্প বা অন্য কোনো মনুষ্যসৃষ্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সংঘ সেবাকাজ চালিয়েছে। যেখানে কর্মকর্তারা হাসপাতাল নির্মাণ‚ অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং অন্যান্য মৌলিক জিনিস সরবরাহ করতে সহায়তা করেছিলেন।