হিন্দু মেয়েদের জোর করে হিজাব পরাচ্ছে স্কুল! প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, তদন্তের নির্দেশ দিল রাজ্য

ফের ধর্মের রাজনীতিতে কলুষিত শিক্ষাঙ্গন। স্কুলছাত্রীদের জোর করে পরানো হচ্ছে হিজাব। শুধু তাই নয়, স্কুলের কিছু ভাল রেজাল্ট করা মেয়েকে হিজাব পরিয়ে তাদের ছবিও পোস্টারে ছেপে ভাইরাল করা হয়েছে! এমনই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে মধ্যপ্রদেশের (Madhyapradesh) দামো জেলার একটি বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে। অনেকেরই দাবি, হিজাব পরা মেয়েগুলি আদৌ মুসলিম নয়। তবু তাদের জোর করে পরানো হয়েছে হিজাব!

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা জেলাশাসকের নজরে এনেছেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রধান, প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। তার পরই ওই ছাত্রীদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন দামো জেলার এক শিক্ষা অধিকর্তা। তিনি জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে কারও নাকি কোনও অভিযোগই নেই। যে ছবি নিয়ে এত বিতর্ক, সেই ছবির মেয়েরা হিজাব নয়, ওড়না নিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছেন বলেও জানান তাঁরা।

বিশেষ সূত্রে খবর, বিতর্কের কেন্দ্রে যে গঙ্গা যমুনা হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, সেই স্কুলেরই এক ছাত্রীর দাবি, ‘আমাদের স্কুলের ড্রেস কোডেই রয়েছে সালোয়ার-কুর্তার সঙ্গে ওড়না নিতেই হবে। কিন্তু ওড়না নিতে ভুলে গেলেও স্কুলে এমন কিছু শাস্তি দেওয়া হয় না। এই ওড়না নিয়েই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমাদের কোনও অভিযোগ নেই।’

তবে ছাত্রীরা বা তাদের পরিবার যাই দাবি থাক না কেন, এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই তীব্র হয়েছে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। হিন্দুত্ববাদী দলগুলি প্রতিবাদে নেমেছে, দাবি করেছে হিন্দু মেয়েদের জোর করে হিজাব পরাচ্ছে ওই স্কুল।

স্কুলের ডিরেক্টর মুস্তাক মহম্মদ বলেন, ‘কোনও মেয়েই হিজাব পরে নেই, ওড়না নিয়ে আছে। এটা আমাদের স্কুল পোশাকেরই অংশ। হিজাব তো গোটা গা প্রায় ঢেকে দেয়, ওড়না তা নয়। কেবল বুকের ওপর থাকে। আমরা কখনওই কোনও ছাত্রীকে তাঁদের ঐতিহ্য বা সংস্কারের বাইরে কিছু পরার জন্য জোর করি না।’

এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের গৃহমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। তিনি বলেন, ‘আমরা দামো জেলার পুলিশের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি, খতিয়ে তদন্ত করবা তারা।’ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানও একই নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কোনও স্কুলই কোনও মেয়েকে জোর করে কোনও ধর্মীয় পোশাক পরাতে পারে না। দামো জেলার স্কুল থেকে এমনই অভিযোগ এসেছে। এর পরেই আমরা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। যা জানা যাবে, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’ কেরলে হিজাব নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছিল আগের বছরই। এবার আবার এমনই এক ঘটনা বিতর্ক উস্কে দিচ্ছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.