সব অভিযুক্তকে ধরা হচ্ছে না কেন? সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ১০ মাস ধরে বন্দি শান্তিপ্রসাদের

নিয়োগ দুর্নীতির চার্জশিটে অনেকেরই নাম রয়েছে। কিন্তু তাঁদের সকলকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন? সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে এই প্রশ্ন তুললেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিন্‌হার আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী এ-ও অভিযোগ করলেন যে, গ্রেফতারের ক্ষেত্রে ‘পিক অ্যান্ড চুজ়’ (বাছাই) করা হচ্ছে। তা হলে সিবিআইয়ের তদন্তে কি কোনও ভুল হচ্ছে— বিষয়টিতে নজর দিতে বলেছে আদালত।

বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। সেখানে সশরীরে হাজির করানো হয় শান্তিপ্রসাদকে। তাঁর আইনজীবী সঞ্জয় জানান, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে ‘পিক অ্যান্ড চুজ়’ (বাছাই) করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, চার্জশিটের ১৬.১.১৩ অনুচ্ছেদে কয়েক জনের নাম রয়েছে। তাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। পরে সঞ্জয় আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের জানান, চার্জশিটে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) কারচুপিতে ভূমিকা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু তাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে’ ছেড়ে রেখেছে সিবিআই। তা হলে কি সিবিআই তদন্তে ভুল হচ্ছে? প্রশ্ন সঞ্জয়ের। তিনি আরও দাবি করেছেন, সিবিআই চার্জশিটে যাঁদের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলা হয়েছে, রিমান্ড পত্রে তাদের ‘ইনস্ট্রুমেন্ট’ হিসাবে দেখানো হচ্ছে।

বিচারক এই বিষয়টিতে সিবিআইকে নজর দেওয়ার কথা জানিয়েছে। আদালতে সিবিআইয়ের উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘‘যাঁদের ধরা হয়নি, অথচ চার্জশিটে নাম রয়েছে, তাঁদের গোপন জবানবন্দি নিন। বা সাক্ষী হিসাবে ডাকুন।’’

নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে শান্তিপ্রসাদকে গত বছরের ১০ অগস্ট গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে। নিয়োগ সংক্রান্ত যে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করেছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাঁর চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছিল শান্তিপ্রসাদকে। অভিযোগ, শান্তিপ্রসাদের আমলে মূলত নিয়োগ দুর্নীতি হয়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল, তাতেও প্রথমে শান্তিপ্রসাদের নাম ছিল বলে সূত্রের খবর। শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী এবং সহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলাতেও বার বার তাঁর নাম উঠে এসেছে। তাঁর রিজেন্ট পার্কের বাড়িতে বেশ কয়েক বার তল্লাশি চালিয়েছে ইডি এবং সিবিআইয়ের আলাদা আলাদা দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.