১১ বাই ২ এ, ক্রিস্টোফার রোড। ১১ কাঠা জমি যেখানে খাতায় কলমে স্পেয়ার পার্টস নামে একটি গ্যারাজ রয়েছে। সঙ্গে গাড়ি মেরামতি হয় এবং পার্কিংও হয়। ৫ বছর আগে পুরসভা বা দমকলকে কিছু না জানিয়ে সেই গ্যারাজের কিছুটা অংশ হয়ে যায় মার্বেল এবং টাইলসের গুদাম। আবার বছর দুয়েক আগে সেই গুদামের একটা অংশ হয়ে যায় স্টেশনরি এবং মুদিখানা সামগ্রীর গুদাম।
অর্থাৎ ক্ষণে ক্ষণে ভোল বদল হল অথচ কেউ কিছু জানতেই পারল না। অতি সম্প্রতি কলকাতায় যে কটি বড় মাপের অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তার অনেক ক্ষেত্রেই ঠিকানার এরকম চরিত্র বদল দায়ী।
যেমন সোমবার রাত ২ টোর ঘটনা। এই জমির অবস্থান এমন জায়গায়, যেখানে দমকলের বড় গাড়ি কোনওভাবেই ঢোকা সম্ভব নয়। চার চাকার ছোট গাড়ি ঢুকতে পারে সামনের ৫ ফুট চওড়া রাস্তা দিয়ে। তাই আগুন লাগার আধ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌছে গেলেও, আগুনের কাছাকাছি দমকলের গাড়ি নিয়ে যেতে কার্যত হিমশিম খেতে হয় দমকলকে।
অবশেষে বিপরীত প্রান্তের একটি বহুতল আবাসনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে পার্কিং লটে ঢুকতে থাকে দমকলের একটার পর একটা গাড়ি। সেখান থেকে জল দেওয়া শুরু হয়। যে বিপুল পরিমাণ দাহ্য পদার্থ এই হঠাৎ গজিয়ে ওঠা গুদামে ছিল, তার রুট বা উৎসমুখে জল ঢালতে তাই সঙ্গত কারণেই দেরি হয়েছে।
রাত ২টোয় লাগা আগুন সকাল ৮টাতেও জ্বলতে থেকেছে ধিকিধিকি। ফায়ার লাইসেন্স, ফায়ার অডিট, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা, রাস্তার মাপ বুঝে ট্রেড বা গোডাউন লাইসেন্স মঞ্জুর করা, এই সব আইন এখানে রয়ে গিয়েছে উহ্য।
প্রতিবার শহরে যেকোনও বড় আগুনের ক্ষেত্রে নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তারপর আবার হাওয়া থিতিয়ে যায়। তাই ট্যাংরা, তিলজলা, তপসিয়া অঞ্চলে প্রাণ হাতে নিয়েই বিপদের সঙ্গে সহবাস করে মানুষ।