ঘাস কাটা, সাপ ধরার মতো কাজ করতে হবে বন সহায়কদের। ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ। এবং সরকারি চাকরি হলেও পদ অস্থায়ী। কিন্তু সেই পদে কাজ পেতেই আবেদন করছেন বহু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ তরুণ-তরুণী। তাঁদের মধ্যে অনেকে আবার প্রথম বিভাগে পাশ করেছেন। কেউ-কেউ পাশ করেছেন এসএসসি। তা-ও কোনও একটি জেলায় নয়, এই ছবি রাজ্যের একাধিক জেলাতেই।
বন দফতরের অনেক কর্তাই এই অবস্থা দেখে স্তম্ভিত। উপযুক্ত চাকরির অভাব এবং বেকার সমস্যা এ রাজ্যে কোন স্তরে পৌঁছেছে, সেটা এই আবেদন থেকে আরও এক বার স্পষ্ট হল বলে অনেকের মত।
নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দুই দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার মিলিয়ে মোট ৪৩৫টি পদে লোক নিয়োগ হবে। তার মধ্যে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে ৬০টি পদে নিয়োগ হওয়ার কথা। ২৯ মে সোমবার ছিল আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ৬০টি পদের জন্য রবিবার পর্যন্ত আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার। সেটা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন কর্তারা। তিন দিনের মধ্যে কম্পিউটারে ‘ডেটা এন্ট্রি’ করে আবেদনকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে ফেলতে হবে।
সোমবার কৃষ্ণনগর ডিভিশন অফিসে আবেদনপত্র জমা দিতে এসেছিলেন মুর্শিদাবাদের নওদার বাসিন্দা সাহেন আকতার। তিনি স্নাতকোত্তর পাশ। তাঁর কথায়, “চাকরির অনেক পরীক্ষাই এখন বন্ধ। অনেক পদে আবার পরিচিতি ছাড়া চাকরি মেলে না। আবার পরীক্ষায় পাশ করলেও নিয়োগ পেতে পেতে বছরের পর বছর কেটে যায়। ফলে কাজ নিয়ে বাছাবাছির জায়গা আর নেই।”
মালদহ ও দুই দিনাজপুরে বন সহায়ক পদে ৬০টি শূন্য পদে আবেদন পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার। মালদহে ৩২ হাজার, বালুরঘাট ও রায়গঞ্জ মিলিয়ে ১৮ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। সেখানেও প্রচুর স্নাতক, স্নাতকোত্তর ছেলেমেয়ে আবেদন করছেন। মালদহের ডিএফও জিজু জাসপার জে বলেন, ‘‘আবেদনগুলি বাছাই করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’
ডুয়ার্সের দুই জেলা জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারেও প্রচুর বন সহায়ক পদে লোক নেওয়া হবে। জলপাইগুড়ি বন বিভাগে শূন্যপদ ১৫০, আলিপুরদুয়ারে ১৭৫। দুই জেলাতেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তরদের একটা বড় অংশ আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন বলে খবর। জলপাইগুড়ির ডিএফও বিকাশ বিজয় সে কথা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘এ দিন বিকেল পর্যন্ত অন্তত ৩০ হাজারেরও বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে।’’ আলিপুরদুয়ারেও জমা পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার আবেদনপত্র।