উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবার ৯০.৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে সবাইকে চমকে দিল দিনমজুরের মেয়ে ডালিয়া ঘোষ। কৃতী এই ছাত্রীর বাবা পাইপলাইনের মিস্ত্রির কাজ করেন। জলপাইগুড়ির কদমতলা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ডালিয়া। তবে শুধু পড়াশোনাই নয়, পড়াশোনার পাশাপাশি সুন্দর ছবিও আঁকতে পারে ডালিয়া। ছবি আঁকা সে শিখেছে নিজেই।
ভবিষ্যতে ডালিয়ার লক্ষ্য আইন বা আইন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা। যদিও পারিবারিক আর্থিক অনটনের জন্য তার সেই স্বপ্ন পূরণ করা কঠিন বলেই মনে করছেন তার পরিবারের সদস্যরা, তার পাড়া-প্রতিবেশীরাও।
ডালিয়ার গৃহশিক্ষক বিশ্বজিৎ রায় তাঁর ছাত্রীকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, পড়াশোনার জন্য খুব পরিশ্রম করে ডালিয়া। পরিশ্রমের জন্যই এই সাফল্য ও অর্জন করতে পেরেছে।
আর ডালিয়া নিজে কী বলছে?
ডালিয়া বলেছে, স্কুলের শিক্ষকরা তাঁকে খুবই সাহায্য করেছেন। তাই সে এই রেজাল্ট করতে পেরেছে।
এরপর কী করবে ডালিয়া?
এ সম্বন্ধে তাঁর নিজের ধারণাও খুব স্পষ্ট নয়। কেননা আর্থিক অনটন তাদের নিত্যসঙ্গী। তাই আগামিদিনে কী ভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে সেটা ভেবে কোনও কূলকিনারাই করতে পারছে না সে। কেউ আর্থিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এলেই একমাত্র পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব হবে বলে মনে করছে ডালিয়া।
এর আগেও জলপাইগুড়ির এক মেধাবী তাক লাগিয়ে দিয়েছে। নিজের স্কুলে মাধ্যমিকে সব চেয়ে বেশি নম্বর (৬৪৯) পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল জলপাইগুড়ির অভিজিৎ দাস। জলপাইগুড়ি শহরের দেশবন্ধু উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিজিৎ। অভিজিতের বাড়ি শহর থেকে কিছুটা দূরে পার্কের মোড় এলাকায়। সেখানেই বাবার সঙ্গে ফুটপাতে জুতো বিক্রি করে সে। এভাবেই তার ছাত্রজীবন যাপন। না করে উপায়ই-বা কী? আসলে এই জুতার দোকান থেকেই তো সংসার চলে। অভিজিতের মাও বলেছিলেন, অনেক কষ্ট করে ও পড়াশোনা চালিয়েছে। আজ ওর সাফল্য তাঁদের তাই দারুণ আনন্দ দিয়েছে। অভিজিতের সাফল্যে খুশি হয়েছিল তার এলাকার লোকজনও। তাঁরা ছুটে এসেছিলেন তার বাড়িতে। দুঃস্থ কিন্তু মেধাবী এই ছাত্রের সফল ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেছিলেন সকলেই।