তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানকে তাঁর ধর্মীয় আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে, অথচ এই ইস্যুতে যিনি সবচেয়ে বেশি সরব সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুপ করে আছেন। এবার নুসরত ইস্যুতে মমতাকে বিঁধলেন বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী।
তিনি বলেন ধর্মীয় আচারের স্বাধীনতার কথা সবথেকে বেশি বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ তারই দলের সাংসদকে এই ইস্যুতে একাধিক ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে, কিন্তু তাঁর কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার।
এদিন নুসরতের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরি বলেন নুসরতের অধিকার রয়েছে যে কোনও ধর্মাচারণ করার। তাঁর স্বামী হিন্দু, সুতরাং তিনি হিন্দু ধর্মের আচার পালন করতেই পারেন। এই দেশের সংস্কৃতি প্রত্যেককে স্বাধীনভাবে ধর্মাচারণের সুযোগ দেয়।
মমতাকে এই ইস্যুতে কটাক্ষ করে দেবশ্রী বলেন নুসরতের বিরুদ্ধে যে ফতোয়া জারি করা হয়েছে, তা নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর মুখ খোলা উচিত। কেন তিনি চুপ, বোঝা যাচ্ছে না। তবে দেবশ্রী চৌধুরীর দাবি এই ইস্যু নিয়েও রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ধর্মাচারণ নিয়ে ফতোয়ার বিরুদ্ধে কথা বললেই হাতছাড়া হয়ে যাবে মুসলিম ভোট, এমনই চিন্তা ভাবনা করে চুপ রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, কটাক্ষ দেবশ্রীর।
উল্লেখ্য, অষ্টমীর সকালেই নবদম্পতি পৌঁছে যান দক্ষিণ কলকাতার সুরুচি সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে।
স্বামী স্ত্রী রং মিলিয়ে পোশাকও পরেন এদিন। অষ্টমীতে পুষ্পাঞ্জলি দেন নুসরত ও নিখিল। এর পরেই নুসরত কোমরে শাড়ি গুঁজে ও নিখিল পাঞ্জাবির হাতা গুটিয়ে ঢাক বাজানো শুরু করেন। আর নবদম্পতিকে সঙ্গ দেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষেপে যান মুসলিম ধর্মগুরুরা৷ উত্তরপ্রদেশের দারুল উলুম দেওবন্দের এক ধর্মগুরু জানিয়ে দেন, এভাবে মুসলিম হয়ে আল্লা ছাড়া অন্য কোনও ভগবানকে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা যায় না৷ তিনি বলেন ইসলাম এই ধরণের কাজকে সমর্থন করে না৷ আল্লা ছাড়া অন্য কারোর উপাসনা করা ইসলামের চোখে হারাম৷ তাঁর দাবি কোনও মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ অন্য ধর্মের হয়ে উপাসনা করতে পারেন না৷ সেটা করতে হলে তাঁকে ধর্মান্তরিত হতে হবে৷
তাঁদের দাবি ভিন ধর্মের উৎসবে অংশ নিলেও, তাতে সক্রিয় ভাবে যোগদানের কোনও প্রয়োজন ছিল কি? তাহলে বাংলার এই অভিনেত্রী তথা সাংসদ নিজের ধর্ম পরিবর্তন করে নিলেই পারেন৷
এদিকে অষ্টমীর পর ইছামতি নদীতে বিসর্জনেও অংশ নেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী নুসরত জাহান। পরে জানান প্রত্যেক মানুষের নিজের ইচ্ছামত ধর্মাচারণের সুযোগ রয়েছে৷ সেটা তাঁর অধিকার৷ কেউ এই বিষয়ে নাক গলাতে পারে না৷ বাংলায় জন্ম নিয়ে এই শিক্ষা পেয়েই বড় হয়ে ওঠা তাঁর৷ বাংলার সংস্কৃতি মেনেই তিনি ধর্মাচারণ করেন৷