বছরটা ছিল ১৯৮৭ এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রাজীব গান্ধী। ইচ্ছা হয়েছিল ছুটি কাটানোর, নতুন কিছু করার। তাই কিছু আত্মীয় এবং বলিউডের কিছুজনকে নিয়ে প্ল্যান করে ফেললেন লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণের। আনন্দ মস্তি করার উদ্যেশে গেলেন লাক্ষাদ্বীপের এমন দ্বীপে যেখানে কেউ থাকে না। ভারতীয় সেনার INS বিরাট যা একটা রণতরী ছিল তা নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন রাজীব গান্ধী। দেশের সুরক্ষায় নিযুক্ত ছিল INS বিরাট, সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে সেটাকে নিজের ব্যক্তিগত ট্যাক্সি বানিয়ে ফেললেন।
INS বিরাটের সাথে একটা সাবমেরিনও নিয়ে যাওয়া হলো। খাদ্য,জল ইত্যাদি সাথে নিয়ে ইতালির কিছু আত্মীয় ও ভারতের কিছু আত্মীয়দের নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন রাজীব গান্ধী। পুরো ১০ দিন ধরে সকলে মিলে লাক্ষাদ্বীপের এক স্থানে কাটিয়ে আসেন। একইসাথে সেনার একটা হেলিকপ্টার সবসময় নিযুক্ত করা থাকত। খাদ্য, জল কোনোকিছুর অভাব হলে যাতে এই হেলিকপ্টার ব্যাবহার করা হত। রাজীব গান্ধী সেনার একটা হেলিকপ্টারকে ২৪ ঘন্টা নিজের ব্যক্তিগত সেবায় ব্যাবহার করেছিলেন।
ওই সময়ে INS বিরাটকে ১ ফিন চালানোর খরচ আসতো দেড় কোটি টাকা। আজকের দিনের হিসেবস এই খরচ ১৫ কোটিরও বেশি হবে। এছাড়াও সাবমেরিন ও হেলিকপ্টারের জন্য আলাদা খরচ। অর্থাৎ সেই সময়কালে রাজীব গান্ধী ব্যাক্তিগত আনন্দ সুখের জন্য প্রত্যেকদিন ৫ কোটি টাকা খরচ করছিলেন। এই সংখ্যা আজ প্রত্যেকদিন ৪৫ কোটি টাকা হিসেবে আসে।১০ দিন ধরে INS বিরাট, সেনার হেলিকপ্টার, সাবমেরিন, নিয়ে ইতালির আত্মীয়দের সাথে ঘুরে আসেন। আজও নেভির অফিসাররা রাজীব গান্ধীর কর্মকাণ্ডের সাক্ষী হয়ে রয়েছেন।
৮ ই মার্চ রামলীলা ময়দান থেকে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজীব গান্ধীর এই কুকৃতীর পর্দাফাঁস করেন। এরপর দেশের মিডিয়া প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যের প্রমান খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে তৎকালীন নৌসেনার অফিসারদের কাছে। নেভি কমান্ডর ভিকে জেটলি বলেন, ‘আমি সেই সময় INS বিরাটে ছিলাম। আমি সাক্ষী যে রাজীব গান্ধী সোনিয়া গান্ধী দেশের সম্পত্তিকে ব্যাক্তিগতভাবে ব্যাবহার করেছিলেন।” INS বিরাটকে ব্যাবহার করে রাজীব গান্ধী ও তার আত্মীয়রা বনগ্রাম আইসল্যান্ডে ভ্রমন করতে বেরিয়েছিলেন। নেভি কমান্ডর ভিকে জেটলি আরো বলেন, দেশের সম্পদের খুব খারাপভাবে ব্যাবহার করা হয়েছিল। নিজের ব্যাক্তিগত সম্পদ ভেবে দেশের সুরক্ষা থেকে INS বিরাটকে সরিয়ে আনা হয়েছিল। সেই সময়েও আজকের মত সাংবাদিকরা কংগ্রেসের দালালি করতে ব্যাস্ত থাকায়, কেউ প্রশ্ন তোলার সাহস করেনি।