BREAKING: আপাতত গাছ কাটা যাবে না! আরে-মামলায় জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট

মেট্রোর কাজের জন্য মুম্বইয়ের আরে কলোনির অরণ্যে গাছ কাটার ব্যাপারে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার সকালে মামলার শুনানিতে মহারাষ্ট্র সরকারকে এ বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

সকাল দশটা নাগাদ সুপ্রিম কোর্টে চলে আসেন আবেদনকারীদের তরফে সিনিয়ার আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে। মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এবং মুম্বই মেট্রোরেলের তরফে সওয়াল করতে হাজির হয়েছিলেন মণীন্দ্র সিংহ।

সওয়া দশটা নাগাদ শুরু হয় শুনানি। আন্দোলনকারীদের তরফে প্রধান বিচারপতিকে দেওয়া চিঠিটিকে জনস্বার্থ মামলার আবেদন হিসেবে দেখেন বিচারপতিরা। ইতিমধ্যে, জেল থেকে ছাড়া পান গ্রেফতার হওয়া ২৯ জন পরিবেশকর্মী।

শুনানির শুরুতে বিচারকেরা আবেদনকারীদের কাছে সেই সরকারি নোটিসটি দেখতে চান, যেখানে মুম্বইয়ের আরে কলোনির ওই এলাকাকে অরণ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিচারক প্রশ্ন করেন, এটা কি আদতে অরণ্য, না ‘ইকো সেনসিটিভ জ়োন’? এই গাছ কাটার আগে কি সরকার ‘ইকো সেনসিটিভ জ়োন’ তকমা মুছে দিয়েছিল? সে ব্যাপারে কোনও নির্দেশিকা জারি করেছিল?

সওয়াল-জবাব চলার পরে সুপ্রিম কোর্ট মহারাষ্ট্র সরকারকে নির্দেশ দেয়, ওই এলাকায় আর যেন কোনও গাছ কাটা না হয়, সে ব্যাপারে নজর রাখার জন্য। সেই সঙ্গে কোর্ট জানায়, আরে কলোনির ওই বনাঞ্চলে কতগুলি অপ্রাপ্তবয়স্ক চারাগাছ আছে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে। এলাকাটি ইকো-সেনসিটিভ জ়োন কিনা, সে ব্যাপারটিও খতিয়ে দেখবে বলে জানায় আদালত।

পরবর্তী শুনানির তারিখ ঘোষণা করা হয় ২১ অক্টোবর। তার আগে পর্যন্ত যাতে কোনও গাছ না-কাটা হয়, সে ব্যাপারে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

সবুজ সরিয়ে আরে কলোনিতে মেট্রো প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ২৩ হাজার ১৩৬ কোটি টাকার কোলাবা-বান্দ্রা মেট্রো প্রকল্পের জন্য আরে অঞ্চলকে প্রায় বৃক্ষশূন্য করতে হবে। একটা কারশেড তৈরির জন্যই কাটতে হবে আড়াই হাজারের বেশি গাছ। রাজ্য সরকারের এই পরিকল্পনার কথা সামনে আসার পরই তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয় আরে কলোনিতে। স্থানীয়রা তো বটেই, রাজ্যের নানা জায়গা থেকে পরিবেশপ্রেমী, ছাত্রছাত্রী থেকে অধ্যাপক-গবেষকরা ভিড় জমান কলোনিতে। হাতে হাত রেখে মানবশৃঙ্খল তৈরি করে বৃক্ষছেদনে বাধা দেন। জমায়েত তুলতে হাজির হয় মুম্বই পুলিশের বিশেষ বাহিনী। গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়।

আরে এলাকায় গাছ কাটা রুখতে চারটি আবেদন দাখিল হয় বম্বে হাইকোর্টে। কিন্তু চারটিই খারিজ করে দেয় আদালত। জানানো হয়, আরে কলোনি সবুজে ভরা হলেও এই এলাকাকে ‘অরণ্য’-এর স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। আদালত মুখ ফিরিয়ে নিলে ফের গাছ কাটার তোড়জোড় শুরু হয়। রুখে দাঁড়ান পরিবেশপ্রেমীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.