মোকার দেখা শেষ পর্যন্ত মিলবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। এর গতিবেগ কত, কোথায় আছড়ে পড়তে পারে, এ সব বিষয়ে ৭ মে, রবিবারই স্পষ্ট ধারণা মিলবে। এ কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ৬ মে, শনিবার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। ৭ তারিখ, রবিবার সেখানে নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। ৮ তারিখ ওই নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তার পর তা ক্রমেই উত্তরের দিকে অগ্রসর হবে। মধ্য বঙ্গোপসাগরে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের। রবিবার নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পরেই তার গতি, শক্তি, কোথায় আছড়ে পড়বে, সেই বিষয়ে হাওয়া অফিসের তরফে বিস্তারিত জানানো হবে।
ঘূর্ণাবর্তের প্রভাব রবিবার থেকে আবহাওয়ার উপর পড়তে শুরু করবে আন্দামান এবং নিকোবরে। রবিবার থেকে সেখানে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। সোমবার থেকে আন্দামান ও নিকোবরের বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আন্দামান নিকোবরের মৎস্যজীবীদের ৭ থেকে ১১ মে সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে। যাঁরা এখন সমুদ্রে গিয়েছেন, তাঁদের ৭ মের মধ্যে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের আগে দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ৬ মে, শনিবার থেকে ১০ মে পরের বুধবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির তেমন সম্ভাবনা নেই। উল্টে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৪ ঘণ্টা দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা হেরফের হবে না বলেই মনে করছে হাওয়া অফিস। তার পর থেকে ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে তাপমাত্রা।
এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরে রাজ্যে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় মোকা। আবহবিদদের একাংশ জানিয়েছেন, অতীতে অনেক ক্ষেত্রেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া সাইক্লোন শেষ পর্যন্ত ওড়িশা বা বাংলাদেশের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। যার জন্য ইতিমধ্যেই তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে ওড়িশাতে। মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা সংক্রান্ত আলোচনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। প্রয়োজন পড়লে কী ভাবে উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া যাবে, মূলত তা নিয়েই সেই বৈঠকে আলোচনা হয় বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ঘূর্ণিঝড় হানা দিলে ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজ যেন শীঘ্র শুরু হতে পারে সেই পরিকল্পনার দিকেও জোর দেওয়ার কথা বৈঠকে জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী।