একঘন্টার ঝড় ও শিলাবৃষ্টি সেই সঙ্গে বজ্রপাত। তার জেরে মৃত্যু হল দুই ব্যক্তির। এই ঝড়ে যেমন ঘর পড়ে খোলা আকাশের নিচে প্রচুর মানুষ দিন কাটাচ্ছেন সেই সঙ্গে ফসলের ক্ষতিতে মাথায় হাত চাষিদের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন সন্ধ্যায় শিয়ালদা- বনগাঁ শাখার সংহতি স্টেশনের কাছে ধান কাটার কাজ করার সময় আচমকাই সেখানে বাজ পরে। আর তাতেই মৃত্যু হয় মিলন বিশ্বাস এবং ধীরজ শর্মা নামে দুই ব্যক্তির। তাদের বাড়ি বেড়গুমের পালপাড়া এলাকায়। গাইঘাটার সুটিয়া এলাকার এক কৃষক পরিমল মন্ডল জানান, এদিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ তাদের এলাকায় একপ্রকার মিনি টর্নেডো বয়ে যায়। প্রবল ঝড় এবং শিলাবৃষ্টিতে তার নিজের জমির ভুট্টা, পেঁপে, তিল, ধান ইত্যাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার মতো এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। গাইঘাটার প্রায় সমস্ত এলাকার পাশাপাশি এদিন বনগাঁ শহরেও প্রবল ঝড় এবং সঙ্গে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এদিন দুপুরে আকাশের চারদিক মেঘে ঢেকে যায়। শুরু হয় ঝড়। আর তারপর ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি। অনেক জায়গাতেই শিল পড়তে শুরু করে। ঝড় শুরু হওয়ার আগে থেকেই বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ পরিষেবা।
গত কয়েক দিনের প্রবল তাপপ্রবাহে নাজেহাল হয়ে পড়েছিলেন রাজ্যের মানুষ। ফলে একটু বৃষ্টির জন্য চাতক পাখির মতো তাকিয়েছিলেন সবাই। অবশেষে সেই স্বস্তির বৃষ্টি এলো। কালবৈশাখী ঝড় সহ বৃহস্পতিবার দুপুরে শুরু হল প্রবল শিলাবৃষ্টি। বৃষ্টিতে স্বস্তি মিললেও শিলাবৃষ্টির কারণে ক্ষতি হল ফসলের। বিশেষ করে গাইঘাটার আমচাষিদের। এদিন দুপুরে বনগাঁ মহকুমা জুড়েই ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। তবে গাইঘাটার কিছু এলাকায় ঝড়ের দাপট ছিল তুলনায় অনেকটা বেশি। স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব পড়েছে ক্ষেতের ফসলে।
ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় গাইঘাটা ব্লকজুড়ে। ঝাউডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচুর ঘরবাড়ি ভেঙ্গেছে, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। বৃহস্পতিবার বিকেলে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির ফলে ঝাউডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আংরাইল খেদাপাড়া, বর্ণেবেড়িয়া, কাউনকে, ঝাউডাঙ্গা সহ বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ের দাপটে ভেঙ্গেছে ঘরবাড়ি। শিলাবৃষ্টির ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ছবি তুলে তাদের পাশে থাকবার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। যদিও ঘটনার পর বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন।