যা করেছেন আপ্তসহায়ক করেছেন। তিনি নিমিত্ত মাত্র। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ানো নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার দাবি এমনই। অন্য দিকে, তাঁর আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়ালের স্ত্রী নিজেই জানেন না স্বামীর ‘বিলাসবহুল জীবনের’ খরচ কোথা থেকে আসছে। তাই নিয়োগ দুর্নীতিতে বিধায়ক তাপস না কি তাঁর আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়াল ‘লিঙ্ক ম্যান’ হয়ে কাজ করেছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তদন্তকারীদের মধ্যে।
শনিবার তাপসের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সিবিআই আধিকারিকের বিশেষ দল পৌঁছে যায় তাঁর আপ্তসহায়ক প্রবীরের শ্বশুরবাড়িতে। প্রবীর শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন। প্রবীরের স্ত্রীর নামে থাকা ওই বাড়িটিতে বেশ কিছু ক্ষণ তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। তাঁরা কথা বলেন প্রবীরের স্ত্রী পায়েল কয়ালের সঙ্গেও। রেকর্ড করা হয় তাঁর বয়ান।
প্রবীরের শ্বশুর পেশায় টোটোচালক। তবে তাঁর বাড়িটি প্রাসাদোপম এবং বাড়িটি যে জামাইয়ের টাকায় তৈরি তা স্বীকারও করে নেন তাপসের শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। অন্য দিকে, বিধায়ক তাপস তাঁর আপ্তসহায়কের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তবে কি তাপসকে অন্ধকারে রেখেই চাকরি দেওয়ার নাম করে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেন করেছেন প্রবীর? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
শনিবার আরও এক দফা তৃণমূল বিধায়ক তাপসের বাড়িতে তল্লাশি শেষ করে সকাল ৯টা নাগাদ প্রবীরের শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছয় সিবিআইয়ের ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় বাড়ি। তল্লাশি অভিযানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক লেনদেনের নথি বাজেয়াপ্ত হয়েছে দাবি তদন্তকারীদের। ওই বাড়ি তৈরিতে যে টাকা ব্যয় হয়েছে, তার উৎস জানতে প্রবীরের স্ত্রীকেও প্রশ্ন করেন তদন্তকারীরা।
সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রবীরের স্ত্রী পায়েল আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কে কিছুই জানি না।’’ এর পর কার্যত স্বামীর কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে পায়েল বলেন, ‘‘ওর অস্বাভাবিক খরচের অভ্যাস এবং বিলাসবহুল জীবনযাপন কোন টাকায় হচ্ছে, তা আমাদের কখনও বলত না।’’
অন্য দিকে, বিধায়ক তাপস দাবি করেছেন তাঁর নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করেছেন প্রবীর। তাঁর কথায়, ‘‘ও বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা তুলেছে বলে শুনেছি। ও আমার দুর্নাম করেছে। ওর চূড়ান্ত এবং কঠোরতম শাস্তির দাবি করছি।’’