জেলের মধ্যেও আঙুলে আংটি পরে থাকেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অতএব তিনি ‘প্রভাবশালী’। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে নিয়ে এমনই ‘পর্যবেক্ষণ’ আদালতে বললেন তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর আইনজীবী। যা শুনে পার্থকে হাত তুলে আংটি দেখাতে বললেন বিচারক। পার্থ দেখালেনও। বললেন, স্বাস্থ্যের কারণে আংটি পরে আছেন।
নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ইডির মামলায় আলিপুর আদালতের শুনানিতে বুধবার ভার্চুয়ালি হাজিরা দিয়েছিলেন পার্থ। সেখানেই প্রাক্তন মন্ত্রীর হাতের আঙুলে আংটি দেখিয়ে আদালতে তাঁকে ‘প্রভাবশালী’ বলে অভিহিত করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, ‘জেল কোড’ অনুসারে সংশোধনাগারে কোনও অলঙ্কার পরা যায় না। পার্থ সেই নিয়ম ভঙ্গ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি কতটা প্রভাবশালী! জবাবে পার্থের আইনজীবী জানান, ওই নিয়মের কথা তাঁর মক্কেলের জানা ছিল না। পার্থ নিজেও জানান, স্বাস্থ্যের কারণেই তিনি আংটি পরে আছেন।
বুধবার শুনানি শুরু হওয়ার পরেই আলিপুর আদালতের বিচারক পার্থকে হাতের আঙুল দেখাতে বলেন। পার্থ হাত তুলে দেখালে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “ওঁর হাতে রিং (আংটি) দেখা যাচ্ছে। তা হলেই বুঝুন, কতটা প্রভাবশালী যে, জেলের ভিতরেও হাতে আংটি পরে রয়েছেন।” ইডির আইনজীবী জানতে চান, গ্রেফতার করার সময়ে প্রাক্তন মন্ত্রীর হাত থেকে আংটি খোলা হয়েছিল কি না। পার্থের আইনজীবী সুকন্যা ভট্টাচার্য আদালতে পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, “জেলের এই নিয়ম উনি (পার্থ) জানবেন কী করে?” যা শুনে বিচারক বলেন, “উনি (পার্থ) তো নিজেকে আইনের ছাত্র বলেন!”
সওয়াল-জবাব শুরুর সময়েই বিচারক পার্থকে হাত দেখাতে বলেন। জেলে যে এই ধরনের অলঙ্কার পরে ঢোকার নিয়ম নেই, তা পার্থ জানেন কি না, তা-ও জিজ্ঞাসা করেন বিচারক। জেল কোডের ৯৬০, ৫০৪ এবং ৫০৩ নম্বর ধারার উল্লেখ করে ইডির আইনজীবী জানান, জেলে ঢোকার পর সমস্ত অলঙ্কার খুলে ফেলাই নিয়ম। তার পরেই তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এক জন অভিযুক্ত কী ভাবে অলঙ্কার পরে জেলে থাকতে পারেন?” বিচারক পার্থের উদ্দেশে বলেন, “আপনাকে কেউ বলেনি যে, এটা নিয়ে ঢোকা যাবে না?” পার্থ জবাব দিলেও তা স্পষ্ট শোনা যায়নি।