জাতীয় এসটি কমিশনের চিঠি পৌছতেই দণ্ডি কান্ড নিয়ে নড়েচড়ে বসলো পুলিশ প্রশাসন। বালুরঘাটে আদিবাসী তিন মহিলাকে দণ্ডি কাটিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানোর ঘটনায় অবশেষে ২ জনকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। যদিও অধরা মূল অভিযুক্ত। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে আদালতে পাঠায় বালুরঘাট থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম বিশ্বনাথ দাস ও আনন্দ রায়। তাঁদের বিরুদ্ধে ৫০৫ / ৫০৯ ও এসসি এসটি অ্যাক্টে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। যদিও এই ঘটনা পুলিশের নাটক, বলে দাবি করেছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, ধৃতরা সকলেই তৃণমূল কর্মী হিসাবেই পরিচিত বলেও দাবি বিজেপির। যদিও ওই মহিলা তিনজনকে যিনি দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন সেই প্রদীপ্তা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এখনও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
গত শুক্রবার তপনের বাদসনকৈর গ্রামের আদিবাসী তিন মহিলাকে দেখা যায় বালুরঘাটের রাস্তায় দণ্ডি কেটে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে যাচ্ছেন। তার পরেই তৃণমূল জেলা কার্যালয়ে ওই তিন মহিলার হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৎকালীন মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তী। মহিলারা জানিয়েছিলেন যে, বৃহস্পতিবার তাঁরা গোফানগর এলাকায় বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। ঘটনার প্রায়শ্চিত্ত করতে দণ্ডি কেটে তৃণমূলে ফিরেছেন। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মহল ও আদিবাসী সমাজ।
বিজেপির পাশাপাশি বিক্ষোভ অবরোধ আন্দোলনে নেমে পড়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষরাও। এমনকি এলাকার সাংসদ সরাসরি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও এসটি কমিশনের নিকট অভিযোগ জানান। যার ভিত্তিতে বুধবার এসটি কমিশনের তরফে রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। আর এর পরেই যেন কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ প্রশাসন। ওইদিন রাতেই এই ঘটনায় জড়িত হিসাবে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাদের এদিন আদালতে তোলা হলে বালুরঘাট জেলা আদালতের বিচারক জামিন খারিজ করে তিন দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
বালুরঘাট জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী সজল ঘোষ বলেন, দু’জনকে এদিন আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের জামিন খারিজ করে দেন। ১৭ তারিখে ফের তাদের আদালতে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যদিও এই বিষয়টি নিয়ে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার জানিয়েছেন, জাতীয় এসটি কমিশনের নির্দেশের পরেই পুলিশ নাটক করছে। দু’জনকে গ্রেপ্তার করে আইওয়াশ করবার চেষ্টা হচ্ছে। ঘটনার মূল অভিযুক্ত যাকে ভিডিওতে দেখা গিয়েছে সেই প্রদীপ্তা চক্রবর্তীকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
জেলা তৃণমূল নেতা সুভাষ চাকি জানিয়েছেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের কেউই রেহাই পাবে না। দলও কাউকে রেয়াত করবে না। আইন আইনের পথেই চলবে।