চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারত সফর করছেন। শি জিনপিংয়ের এই সফরকে ভারত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে। অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে একে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এই সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হ’ল প্রধানমন্ত্রী মোদী চীনের রাষ্ট্রপতিকে দক্ষিণ ভারতের একটি ঐতিহাসিক স্থানে স্বাগত জানাবেন। শহরটি তামিলনাড়ুর মহাবালীপুরম। এই স্থানের চীনের সাথে দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী ১১ ও ১২ ই অক্টোবর চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সাথে সাক্ষাত করবেন। এই সময়ে, মহাবালীপুরমেই দুজনের দেখা হবে। মহাবালীপুরমের দূরত্ব চেন্নাই থেকে 60 কিলোমিটার। এই মহাবলীপুরম পল্লব জাতি নরসিংহ দেব বর্মণ দ্বারা বসানো হয়েছিল।
মহাবালীপুরম পল্লব রাজবংশের যশগথের প্রতীক, চীনের সাথেও এর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। পল্লব রাজবংশের সাম্রাজ্য চীন অবধি পৌঁছেছিল। পল্লব রাজবংশের এই শক্তির পরিপ্রেক্ষিতে চীন আত্মসমর্পণ করেছিল এবং পল্লব সম্রাট নরসীমন ২ কে দক্ষিণ চীনের রাজ্যপাল হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। চীন আত্মরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছিল। চীন আশঙ্কা করেছিল যে পল্লব রাজবংশের সেনাবাহিনী চীনের অভ্যন্তরে যে কোনও সময় তার সাম্রাজ্য আক্রমণ করতে পারে।
সে কারণেই চীন পল্লব রাজবংশের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। চীনের রাজা নরসিমহান 2 এর দরবারে একটি প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন। প্রতিনিধিটির হাতে একটি রেশমী কাপড় ছিল, যার উপরে পল্লব বংশের রাজাকে রাজ্যপাল নিযুক্ত করার কথা ছিল। পল্লব বংশের তৃতীয় রাজপুত্র বোধিধর্ম বৌদ্ধ ভিক্ষু হয়েছিলেন এবং চীনও ভ্রমণ করেছিলেন। সপ্তম শতাব্দীতে, যখন চীনা ভ্রমণকারী জুয়ানজং এখানে এসেছিলেন তখন মহাবালীপুরম ভারত এবং চীনের মধ্যে একটি শক্তিশালী বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে বিকশিত হয়েছিল।
এই কারণেই এই স্থানটির গুরুত্ব ভারত ও চীনের জন্য খুব বেশি। ভারত সরকার এই স্থানেই চীনের রাষ্ট্রপতির ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাক্ষাত করানোর সিধান্ত নিয়েছে। এই সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। তবে সভার তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এই বৈঠকটি রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সম্পর্ক ও ব্যবসায়ীক দৃষ্টিকোণ থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।