প্রায় পৌনে দু’মাস দেখা যায়নি তাঁকে। চিরুনি তল্লাশি চালিয়েও তাঁকে খুঁজে পায়নি সিবিআই। অবশেষে পঞ্চমীর সকালে দেখা মিলল কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের।
এ দিন তিনি গিয়েছিলেন আলিপুর আদালতে। হাইকোর্ট তাঁকে যে আগাম জামিন দিয়েছে, নিয়মানুযায়ী তা নিম্ন আদালতে নিশ্চিত করতে হয়। সেই কাজেই এ দিন সশরীরে হাজির হলেন রাজীব।
আকাশি রঙের শার্ট, গাঢ় নীল রঙের প্যান্ট পরিহিত রাজীব একটি কথাও বলেননি সাংবাদিকদের সঙ্গে।
আদালতের কাজ মিটিয়েই বেরিয়ে যান।
চার দিনের রুদ্ধদ্বার শুনানি শেষ হওয়ার পর সোমবার বিচারপতি শহীদুল্লাহ মুন্সি এবং বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্ত রায়দান স্থগিত রাখেন। মঙ্গলবার রায় দিতে গিয়ে আদালত বলেছে, রাজীব কুমার তদন্তে সহযোগিতা করছেন। তাঁকে এই মুহূর্তে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে বলে আদালত মনে করছে না। আদালত বলেছে, রাজীব কুমারকে যে কোনও তদন্তের জন্য তদন্ত এজেন্সি ডাকতে পারে। ডাকলে রাজীবকে যেতেও হবে। কিন্তু সিবিআই-কে নোটিস পাঠাতে হবে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা আগে।
হাইকোর্টই রাজীব কুমারের উপর থেকে আইনি রক্ষাকবচ সরিয়ে নিয়েছিল। তারপর গত ১৭ দিন ধরে আদালতে আদালতে ঘুরেছেন রাজীব। প্রথমে বারাসত কোর্ট। সেখানে এক্তিয়ারের প্রশ্ন ওঠায় রাজীবের আবেদন গৃহীতই হয়নি। তারপর বারাসত জজ কোর্ট। জেলা আদালত বলে, সারদার মূল মামলা যেহেতু দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়, তাই উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলা আদালত এর শুনানি করতে পারে না। তাঁকে আবেদন করতে হলে, তা করতে হবে আলিপুর আদালতে। আলিপুর আদালতে যান বর্তমান ডিআইজি সিআইডি। কিন্তু বড় ধাক্কা খেতে হয় চিটফান্ড তদন্তের জন্য গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলেরে প্রাক্তন প্রধানকে। আলিপুর আদালত রাজীব কুমারের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।
তারপর আলিপুর আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আসেন রাজীবের আইনজীবীরা। এর মধ্যেই চলতে থাকে রাজীবের খোঁজে তল্লাশি। দিল্লি থেকে বিশেষ টিমকে কলকাতায় নিয়ে আসে সিবিআই। কিন্তু কলকাতা, কলকাতার উপকণ্ঠ এমনকি পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদায় হানা দিয়েও রাজীবের টিকি পায়নি কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি। চিঠি দিয়ে ডিজি, স্বরাষ্ট্রসচিব, মুখ্যসচিবের থেকে সিবিআই জানতে চায় রাজীব কোথায়? তাঁর বর্তমান অবস্থান কী? কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি।
ছুটি শেষ এবং আগাম জামিন সবটাই প্রায় কাছাকাছি সময় হয়ে যায়। অবশেষে চাক্ষুষ করা গেল রাজীব কুমারকে।