Rinku Singh | KKR: মোতেরায় আছড়ে পড়ল রিঙ্কু সুনামি! টানা পাঁচ ছয়ে অবিশ্বাস্য ম্যাচ জেতালেন কলকাতাকে

গতবার আইপিএল অভিষেকেই চমকে দিয়েছিল গুজরাত টাইটান্স (Gujarat Titans)। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল হার্দিক পাণ্ডিয়ার (Hardik Pandya) ফ্র্যাঞ্চাইজি। ঠিক যেখান থেকে হার্দিকরা শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু করেছেন চলতি আইপিএল সিক্সটিনে (IPL 2023)। ব্যাক-টু-ব্যাক জিতেছেন হার্দিকরা। প্রথম ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসকে (Chennai Super Kings) হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে গুজরাত হারিয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালসকে (Delhi Capitals)। রবিবার অর্থাৎ আজ গুজরাত নিজেদের ঘরের মাঠ নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে (Narendra Modi Stadium, Ahmedabad) তৃতীয় ম্যাচ খেলল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (GT VS KKR) বিরুদ্ধে। তৃতীয় ম্যাচেও বুক ফুলিয়ে জিতবে ভেবেছিল গুজরাত। কিন্তু রিঙ্কু সিংয়ের (Rinku Singh) অবিশ্বাস্য ইনিংস গুজরাতের মুখ থেকে জয় কেড়ে নেয়। অভাবনীয় ইনিংস খেলে কলকাতাকে জেতালেন রিঙ্কু। কলকাতা চলতি আইপিএলের (IPL 2023) প্রথম ম্যাচে পঞ্জাবের (PBKS VS KKR) কাছে হেরেছিল, দ্বিতীয় ম্যাচে বেঙ্গালুরুর ( KKR VS RCB) বিরুদ্ধে দারুণ প্রত্যাবর্তন করে তারা। তৃতীয় ম্যাচেও ফের জিতল কেকেআর।

এদিন শুরুতেই চমকে দিয়েছে গুজরাত। নীতীশ রানার সঙ্গে টস করতে আসেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। রশিদ টসের সময়ে জানিয়ে দিলেন হার্দিকের না খেলার প্রকৃত কারণ। রশিদ বলেন, ‘হার্দিকের শরীরটা হালকা বিগড়েছে। আমরা ওকে নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইনি।’ টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্তে রশিদ বলেছিলেন, ‘ভীষণ তরতাজা উইকেট। আশা করি ভালো একটা রান করব, সেই রান তাড়া করব। দল হিসেবে ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। ভালো ব্যাট করেই বড় রান করতে চাই।’ গুজরাত প্রথমে ব্যাট করে তোলে চার উইকেট হারিয়ে ২০৪।  ঋদ্ধিমান সাহা ও শুভমন গিলের চেনা ওপেনিং জুটি শুরু করেছিলেন এদিন। তবে বাংলার উইকেটকিপার-ব্যাটার ১৭ বলে ১৭ করে ফিরে যান। সুনীল নারিনের বলে তিনি নারায়ণ জগদিশনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। ৩৩ রানে প্রথম উইকেট হারানো গুজরাতের হাত শক্ত করতে এসেছিলেন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার সাই সুদর্শন। গিলের সঙ্গে রান তোলার কাজটা শুরু করে দেন তিনি। ৩১ বলে ৩৯ করে ফিরে যান গিল। তিনিও শিকার হন নারিনের। গিল ক্যাচ তুলে দেন উমেশ যাদবের হাতে। এরপর চারে এসে অভিনব মনোহর ৮ বলে ১৪ রান করে আউট হয়ে যান। তাঁকে ফেরান গত ম্যাচে কেকেআরের আবিষ্কার সুযশ শর্মা। এরপর বিজয় শংকর এসে দাপট দেখাতে শুরু করেন। সুদর্শন ৩৮ বলে ৫৩ করে ফেরেন। তিনি উইকেট দেন নারিনের বলে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন বিজয়। ৩৩ মিনিট ক্রিজে থেকে দাপট দেখালেন তিনি। ২৪ বলে করলেন ৬৩ রান। ২৬২.৫০-র স্ট্রাইক রেটে এদিন খেললেন তিনি। বিজয়ের ব্যাট থেকে এল চারটি চার ও পাঁচটি ছয়। নারিন তিনটি ও সুযশ নেন একটি উইকেট।

কেকেআরের হয়ে এই রান তাড়া করতে নামেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও নারায়ণ। কিন্তু মাত্র ২.৩ ওভারেই কেকেআরের প্রথম উইকেট চলে যায়। ১২ বলে ১৫ রান করে ফিরে যান আফগান ওপেনার। মহম্মদ শামির বলে যশ দয়ালের হাতে ক্যাচ তুলে ফিরে যান। এরপর নারায়ণও আউট হয়ে যান মাত্র ৬ রান করে। এরপর ম্যাচটা ধরে নেন ক্যাপ্টেন নীতীশ ও ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার ভেঙ্কটেশ আইয়ার। চার ওভারে ২৮ রানে দুই উইকেট চলে গিয়েছিল টিমের। সেখান থেকে রানা-আইয়ার ৫৫ বলের জুটিতে ১০০ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে। ২৯ বলে দুরন্ত ৪৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হন রানা। তিনিও ক্যাচ তুলে দেন শামির বলে। এরপর রিঙ্কু সিংকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট হাতে তাণ্ডবলীলা দেখাতে শুরু করেন ভেঙ্কটেশ। চার-ছয় ছাড়া কথা বলছিলেন না তিনি। বহু দিন পর সেই চেনা ভেঙ্কটেশকে দেখে কেকেআরের সমর্থকরা উদ্বেল হয়ে পড়েন। তবে ভেঙ্কটেশের দুরন্ত ইনিংস থামে ১৫.৫ ওভারে। আলজারি জোসেফের বলে লং অনে ভেঙ্কটেশ ধরা পড়ে যান শুভমনের হাতে। এদিন ৪০ বলে ভেঙ্কটেশের ৮৩ রানের ইনিংস অনেকদিন মনে থেকে যাবে। আটটি চার ও পাঁচটি ছয় হাঁকান তিনি। ভেঙ্কটেশ যখন ফেরেন, তখন কলকাতার স্কোর চার উইকেট হারিয়ে ১৫৪। তবে ১৭ নম্বর ওভারে এসে রশিদ একাই কামাল করে দেন। এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার। পরপর তিন বলে তুলে নেন তিন উইকেট। আন্দ্রে রাসেল (১), সুনীল নারিন (০), শার্দূল ঠাকুর (০) হন রশিদের শিকার। চলতি আইপিএলের প্রথম হ্যাটট্রিক এল রশিদের সৌজন্যে। এরপরেই এই ম্যাচ কেকেআরের হাত থেকে বেরিয়ে যায়। এমনটাই ভেবে নিয়েছিলেন সকলে। কিন্তু সব হিসেব বদলে দিলেন রিঙ্কু। শেষ ৬ বলে কেকেআরের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। রিঙ্কু টানা পাঁচটি ছয় মেরে সব হিসেব বদলে দেন। যশ দয়াল ভাবতে পারেননি যে বল হাতে তাঁর এমন দুর্দিন আসতে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.