‘‘গ্রামীণ ভারত নিজেদের প্রকাশ্য শৌচমুক্ত বলে ঘোষণা করে দিয়েছে, ’’ মহাত্মা গান্ধীর দেড়শো-তম জন্মবার্ষিকীতে গুজরাতে দাঁড়িয়ে দেশকে প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ঘোষণা করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পরই ২০১৪-তে স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময়েই স্থির হয়, ২০১৯ সালে গান্ধীজির জন্মবার্ষিকীতে গোটা দেশকে প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ঘোষণা করা হবে। গান্ধী জয়ন্তীর দিন সন্ধ্যায় আহমেদাবাদের ‘স্বচ্ছ ভারত দিবস’ অনুষ্ঠানে মোদী ঘোষণা করেন ভারতের সমস্ত গ্রাম নিজেদের প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ঘোষণা করে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘মাত্র ৬০ মাসে ৬০ কোটি মানুষের জন্য ১১ কোটিরও বেশি শৌচালয় তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এটা সত্যিই অভূতপূর্ব।’’ প্রধানমন্ত্রী এ-ও বলেছেন, ‘‘শৌচালয় ব্যবহারের অভ্যাস যাতে চালু থাকে, তার জন্য কাজ করে যেতে হবে। যারা এই অভ্যাসের বাইরে তাদেরও জুড়তে হবে।’’
বুধবার সকালে রাজঘাটে যান মোদী। সেখানে গান্ধীজিকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। সেখান থেকে বিজয়ঘাটে যান। গান্ধীজির পাশাপাশি লালবাহাদুর শাস্ত্রীরও ১১৫তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। বিজয়ঘাটে গিয়ে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীকেও শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর তিনি সোজা সংসদে যান। সেখানেও এক প্রস্থ শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর্ব সারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একদিকে স্বচ্ছতা. অন্যদিকে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ, এই দুই ছিল মহাত্মা গান্ধীর খুব প্রিয়। বর্তমানে প্লাস্টিক স্বচ্ছতা অভিযানের মূল অন্তরায়। তাই আগামী ২০২২ সালের মধ্যে দেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করার শপথ নিয়েছি আমরা।”
সবরবমতী আশ্রমের ভিজিটার্স বুকেও মোদী লেখেন, ‘গান্ধীর ১৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর স্বচ্ছ ভারতের স্বপ্ন সফল হতে দেখে আমি তৃপ্ত। ভারত আজ প্রকাশ্য শৌচমুক্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃত। এমন দিনে আশ্রমে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।’
দেশকে প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ঘোষণা করলেও বাস্তব পরিস্থিতি কী, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলছে। খাতায় কলমে, ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গ্রামীণ এলাকায় প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু বাড়িতে শৌচালয় না থাকায় প্রকাশ্যে শৌচ করায় গত সপ্তাহেই মধ্যপ্রদেশের শিবপুরীতে দুই দলিত বালককে পিটিয়ে খুন করেছে উচ্চবর্ণের লোকেরা। সে ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে শৌচ বন্ধ হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।