‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেসের মতো আধুনিক ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হাওড়ার ঝিল সাইডিংয়ে বুধবার নতুন ডিপোর উদ্বোধন হয়ে গেল। মোট তিনটি পর্যায়ে ৩০০ কোটি টাকার বেশি খরচ করে ওই ডিপো তৈরি করা হচ্ছে।
এ দিন তিনটি পর্যায়ের মধ্যে প্রথম দু’টি পর্যায়ে ১৪০ কোটি টাকা খরচ করে শেষ হওয়া কাজের ভিত্তিতে ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডিপো খুলে দেওয়া হল। সেখানে সারা বছর ধরে যে কোনও আবহাওয়ায় ১৮ কোচের ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। প্রায় ৪২৫ মিটার লম্বা শেডে ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থা নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় ঢাকা শেডের নীচে পাশাপাশি দু’টি বিশেষ লাইনে একই সঙ্গে ট্রেনের তলা (পিট), অভ্যন্তরের মেঝে এবং ছাদ (ওভারহেড ইকুইপমেন্ট বা ওএইচই) পরীক্ষা করা যাবে। নতুন শেডে জল পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থাযুক্ত কোচ ওয়াশিং প্লান্ট থাকছে। এ ছাড়াও প্রায় জনা চল্লিশ কর্মীর বিশেষ দল শুধুমাত্র বন্দে ভারত এক্সপ্রেস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়মিত ভাবে ওই বিশেষ শেডে রয়েছেন।
আগে প্রয়োজন অনুযায়ী একাধিক লাইনে ট্রেন নিয়ে গিয়ে পর পর পরীক্ষা করা হত। কিন্তু ওই প্রক্রিয়ায় অনেক সময় নষ্ট হত। রেল সূত্রের খবর, নতুন শেডে হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ছাড়াও আরও চারটি প্রথম সারির এক্সপ্রেস ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। পরের ধাপে ওই দু’টি লাইনকে লিলুয়ার দিকে আরও কিছুটা লম্বা করার কথা ভাবা হয়েছে। পাশাপাশি, হাওড়ার দিকে লাইন আরও কিছুটা দীর্ঘ করে পাশের বেশ কয়েকটি লাইনকে যুক্ত করার কথাও পরিকল্পনায় রয়েছে।
পরের ধাপে প্রায় ১০৩ কোটি টাকা খরচ হওয়ার কথা। সব শেষে আরও ৬৪ কোটি টাকা খরচ করে পূর্ণাঙ্গ পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। যাতে ভবিষ্যতে সেখানে একাধিক বন্দে ভারত ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়। এ দিন উদ্বোধন করতে এসে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা জানান, হাওড়ার পাশাপাশি ডানকুনিতেও একটি অত্যাধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। দু’টি জায়গায় পরিকাঠামো সম্পূর্ণ হলে দৈনিক ৪০-৫০টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। ভবিষ্যতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে পূর্ব রেল সে ভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভবিষ্যতে কোনও ট্রেনের নির্দিষ্ট কোন যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন— সেটাও আগাম জানা সম্ভব হবে। সেই পরিকাঠামোও হাওড়ায় গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের জিএম।