সাহিত্য-সংস্কৃতি মনের নান্দনিকতা জাগরিত করে। সেই বোধের প্রকাশ ঘটাতে শনিবার দেশের মাটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের পক্ষ থেকে রাত ৮.৩০টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত ‘সাহিত্য-সংস্কৃতি সভা’-র আয়োজন করা হয়।
সাপ্তাহিক এই সাহিত্য সভার বৈশিষ্ট্য হল, সভার শুরুতে ভারতীয় সাধুসন্তদের সত্যোপলব্ধি-সঞ্জাত আধ্যাত্মিক সাহিত্য, তাঁদের শ্রীমুখ উচ্চারিত অমৃতকথা পরিবেশন করা। এদিন সভামুখ্য ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির সন্ন্যাসী স্বামী অচ্যুতানন্দজী মহারাজ৷ অমৃত কথা পর্বে এদিন প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরকে নিয়ে অমৃত বচন উপস্থাপন করেন শ্রীমৎ বন্ধু গৌরব ব্রহ্মচারী মহারাজ। তিনি মহানাম অঙ্গন, মহাউদ্ধারণ মঠ, কলকাতার সম্পাদক; সুসংগঠক, সুবক্তা এবং সুলেখক। সাধু-সন্ত মহলে তিনি এক উজ্জ্বল এবং অগ্রগণ্য নাম।
‘দেশের মাটি’ বৌদ্ধিক গোষ্ঠী নানান সময়ে নানান বিষয়ে সাংস্কৃতিক চর্চার আয়োজন করে থাকে; সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতির নানান আঙ্গিক পরিবেশিত হয়। পালিত হয় মহাত্মা সাধুসন্তের আবির্ভাব তিথি, প্রাতঃস্মরণীয় মনীষীদের জন্মজয়ন্তী, কৃষি, পশুপালন, পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা সভা। অফলাইনে অথবা অনলাইন- দু’ভাবেই আলোচনা হয়ে আসছে।
গত ১৯ শে মার্চ প্রথম নিয়মিত সভা থেকে সদস্যরা স্থির করেন তারা সাপ্তাহিক সভা করবেন। সেই হিসাবে এদিন ছিল সভার দ্বিতীয় দিন। বিষয়বস্তু কেবলমাত্র সাহিত্য সভার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক, বিজ্ঞান, ক্রীড়া, রাজনৈতিক সব বিষয়েই আনন্দদায়ক সুখস্পর্শী আলোচনায় সদস্যরা মগ্ন ছিলেন। তারাই কুশীলব, তারাই সুধীজন। অবশ্য আমন্ত্রিত অতিথিরাও উপস্থিত থাকেন, সনাতনী সংস্কৃতির ধারক ও বাহক যে কেউ থাকতে পারেন এই সভায়।
রোজই শেষের নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ থাকে সর্বসাধারণের আলোচনার জন্য। চ্যাটবক্সে লিখেও সদস্যরা মতামত দেন। ১৯ শে মার্চ প্রথম সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. শ্রীকান্ত গাঙ্গুলি। সঞ্চালন করেছিলেন মিলন খামারিয়া। এদিনও মিলনবাবুকে সঞ্চালন করেন, তিনি দেশের মাটির অন্যতম পরিচালক।
আসন্ন রামনবমী তিথিকে মনে রেখে গতকালের সভায় হাওড়ার রামরাজাতলার বিশদ ধর্মীয় ইতিহাস তুলে ধরেন ড. অলি বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন একাধিক শিল্পীর কণ্ঠ গেয়ে ওঠে শ্রীরামের ভজন। পরিবেশিত হয় আকর্ষণীয় কত্থক নৃত্য। বঙ্গে শ্রীরামের দারুমূর্তি বিষয়ে আলোচনা করেন শ্রীমতী মহাশ্বেতা চক্রবর্তী। বেতার শিল্পী শ্রীমতী সঙ্ঘমিত্রা মিশ্র অসামান্য সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এদিন উদ্বোধনী ও সমাপ্তি সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট শিল্পী অঙ্কিতা চৌধুরী। নৃত্য পরিবেশন করেন শ্রী কৌশিক মাইতি। অনুষ্ঠানের সূচনায় সুভাষণ পাঠ করেন মনোরঞ্জন হাজরা।