কখনও টিউশান পড়তে যাওয়ার পথে কখনও স্কুলে যাওয়ার পথে পথ আটকাতো। কদিন আগে তো জোর করে ব্যাগে একটা মোবাইল ঢুকিয়ে দিয়েছিল। দাবি একটাই প্রেম করতে হবে, করতে হবে বিয়ে। দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (Class 10 Student) বিগত কয়েক মাস ধরে এই প্রস্তাবই দিয়ে আসছিল এলাকারই এক যুবক।
তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শেষে আত্মহত্যার (Suicide) পথ বেছে নিল ওই দশম শ্রেণির ছাত্রী। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা কেতুগ্রামের নিরোল গ্রামের ছাত্রী সুস্মিতা দত্তের (১৫)। শোকের ছায়া গোটা এলাকায়। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত যুবকের সন্দীপ দত্তের (২৬) বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃত ছাত্রের পরিবার। তাঁরও বাড়ি নিরোল এলাকায়। কড়া শাস্তিরও দাবি জানানো হয়েছে। যদিও ঘটনার পর থেকেই গ্রামছাড়া সন্দীপ।
ঘটনা প্রসঙ্গে মৃত ছাত্রীর মা মৌসুমী দত্ত বলেন, “টিউশান পড়ে বাড়ি এসেই মেয়ে উপরের ঘরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর মেয়েকে ডেকে সাড়া না পেয়ে উপরে এসে দেখি ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। আশপাশের লোকজন ডেকে দরজা ভেঙে দেখি মেয়ে ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে।” তিনি আরও বলেন, “ওই বখাটে ছেলের জন্যই আমার মেয়ের এই পরিণতি। ও আমার মেয়েকে সারাক্ষণ উত্যক্ত করত। পড়তে যাওয়ার পথে বিরক্ত করত। রাস্তায় দেখলে বিরক্ত করত। প্রেম করার জন্য জেরাজুরি করত। বিয়ে করারও প্রস্তাব দিত। বাড়িতে এসে প্রায়শই কন্নায় ভেঙেও পড়ত আমার মেয়ে। সবই খুলে বলত আমাকে। আমি বলতাম বেশি পাত্তা না দিতে। সোমবার স্কুল থেকে ফেরার পথে আমার মেয়ের ব্যাগে জোর করে মোবাইল ঢুকিয়ে দিয়েছিল। আমার মেয়ে নিতে চায়নি। তাও ঢুকিয়ে দিয়েছিল। ফোনটা থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।”
মেয়ের বাবা সুকান্ত দত্ত বলেন, “পাশের গ্রামেই ছেলেটার বাড়ি। দীর্ঘদিন থেকে নানাভাবে উত্যক্ত করত আমার মেয়েকে। স্কুলে যাওয়ার পথে আটকাতো। পড়তে যাওয়ার পথে আটকাতো। আজ তো আচমকা আমাদের মেয়ে এ কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। আমরা ওই ছেলের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা ওর কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আর কখনও যেন কারও সঙ্গে এই কাজ করার সাহস ও না দেখায়।”