“মুখ্যমন্ত্রী নিজের মতো ট্যালেন্টেড ভাবছেন সবাইকে,” সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে পড়ানোর ভাবনার কড়া সমালোচনায় সুকান্ত

বাঁকুড়ার জেলা পুলিশের অঙ্কুর প্রকল্পে প্রাথমিকের ছাত্র-ছাত্রীদের অংক থেকে ইংরেজি পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। এই খবর সামনে আসতেই প্রবল সমালোচনার ঝড় উঠতে শুরু করে রাজ্যজুড়ে। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় অষ্টম শ্রেণি পাস ন্যূনতম যোগ্যতায় নিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রাথমিকে ক্লাস নেওয়ার খবর শুনে তুমুল সমালোচনা করেন বিজেপি নেতারা।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে নিজের মতো ভাবছেন। কটাক্ষ করে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজে শিল্পী, অধ্যাপক, বিজ্ঞানী ইত্যাদি নানা প্রতিভার অধিকারী বলে তিনি ভাবছেন সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে শিক্ষকতার কাজটা হয়ে যাবে। সুকান্ত মজুমদার এধরনের সিদ্ধান্তে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা মন্ডলীরও সমালোচনা করেন।

সুকান্ত মজুমদার দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, এই ধরনের, (সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে পড়ানোর ভাবনা) একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল কিন্তু রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ হওয়ার পর সেটা সম্ভবত ক্যান্সেল হয়েছে বলে জানতে পারছি। একটি নোটিশ এসেছে।” সুকান্ত এই ধরণের প্রকল্প তৈরি ভাবনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা মন্ডলীরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা পরিষদে কারা রয়েছেন মাঝে মাঝে সেটা আমার জানতে ইচ্ছে করে, তাদের মুখগুলো দেখতে ইচ্ছে করে। এত বুদ্ধি তারা কোথা থেকে দেয় মুখ্যমন্ত্রীকে? পড়ানোর মতো একটা মহৎ কাজ যে কাজ আগামী প্রজন্ম তৈরি করবে, ভবিষ্যৎ তৈরি করবে, সেই কাজ সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে করানোর মতো ভাবনা কোথা থেকে তারা পান?”

বার বার বিজেপি নেতারা অভিযোগ করেন, পুলিশ দিয়ে সরকার চালাচ্ছে তৃণমূল। আবার সেই সিভিক পুলিশ দিয়ে পড়ানোর চিন্তাতে তিনি বলেন, “তাহলে পুলিশি থাকুক আর কিছু দরকার নেই। শিক্ষক থাকার কি দরকার? তারা থানাতে এসেও বসবে, তারা স্কুলে গিয়ে ক্লাসও নিয়ে নেবে। ইতিহাস পরিয়ে দেবে। আর কিছু দরকার থাকবে না।”

এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ভুল করে ফেলছেন। তিনি যেমন একদিকে চিত্রশিল্পী, একদিকে কবি, একদিকে সাহিত্যিক, একদিকে বিজ্ঞানী, একদিকে অধ্যাপক বা অধ্যাপিকা যাই বলুন না কেন, তিনি নিজের মতো সবাইকে ভাবছেন। সবাই তার মতো ট্যালেন্টের অধিকারী হন না। নিজের মত সবাইকে ভাবছেন বলেই এই ধরনের পদক্ষেপ করার কথা ভাবছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কলকাতা থেকে জেলার বিভিন্ন জায়গায় এই ঘটনার বিরোধিতায় পথে নেমেছে বিজেপি। দুপুরে সল্টলেকের করুণাময়ীতে ডিরোজিও ভবন ও বিদ্যাসাগর ভবনের বাইরেও বিক্ষোভ চলে। সংসদের বাইরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ধিক্কার জানিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি সহ অঙ্কুর প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিজেপি সাংসদরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.