আদালতের রায়ে পুলিশি নিরাপত্তায় চার বছর পর মিড ডে মিল চালু ঝালদার চাতামঘুটু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে

আদালতের রায়ে চার বছর পর মিড ডে মিল চালু হলো ঝালদার চাতামঘুটু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পুলিশি নিরাপত্তায় শুরু হলো মিডডে মিলের রান্না। খুশি পড়ুয়ারা।

২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে ঝালদার চাতামঘুটু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিডডে মিলের রান্না বন্ধ হয়ে যায়। কারণ এই বিদ্যালয়ে চাতামঘুটু উন্নয়ন স্বনির্ভর মহিলা সমিতি রান্না করছিল। ২০১৯ সালে গ্রামের বাকি ১৪- ১৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রান্নার দাবিতে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দেয়। সেই সময় থেকে রান্না বন্ধ হয়ে যায়। ২০২২ সালে যারা রান্না করতো সেই চাতামঘুটু উন্নয়ন স্বনির্ভর মহিলা সমিতির সদস্যরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। উচ্চ আদালত রায় দেয় যে মহিলা স্বনির্ভর দল রান্না করছে সেই মহিলা দলই রান্না করবে। তাই আজ ঝালদা থানা ও গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় আদালতের নির্দেশে পুনরায় শুরু হলো মিডডে মিলের রান্না। এবিষয়ে ঝালদা ১ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও রাকেশ মেটে ঘটনার কথা স্বীকার করেন।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মধুমিতা মাহাতো জানান, বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৭৫ জন ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষিকা দুই জন। তিনিও চান যাতে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা আর মিডডে মিল থেকে যেন বঞ্চিত না হয়।

বিষয়টি নিয়ে চাতামঘুটু উন্নয়ন স্বনির্ভর মহিলা সমিতির পক্ষ থেকে আদরি মাহাতো জানান, “আমরা বাধ্য হয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। কারণ, গ্রামের বাকি মহিলা স্বনির্ভর দলগুলি রান্নার দাবিতে স্কুলে তালা দিয়েছিল। আজ উচ্চ আদালতের রায়ে আমরা খুশি। আজ আমরা পুনরায় রান্না করছি।

যদিও বিষয়টি নিয়ে গ্রামের অন্যান্য মহিলা স্বনির্ভর দলের পক্ষ থেকে মা সন্তোষী স্বনির্ভর মহিলা সমিতির উষা মাহাতো হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, আমরা ভেবেছিলাম আজ আমরা সুবিচার পাবো। কারণ অন্যান্য স্কুলে দেখেছি গ্রামের মহিলা স্বনির্ভর দলগুলি পালা করে রান্না করে। তাই আমরাও সেই দাবি নিয়ে নেমেছিলাম। কিন্তু আজ বিশাল পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে আদালতের নির্দেশে রান্না শুরু করল ওরা। সেই সময় আমরা গ্রামের ১৪-১৫ টা দল আন্দোলনে ছিলাম। বর্তমানে এখন আরও স্বনির্ভর দল বেড়েছে। তাই আমাদের দাবি না মানা হলে আমরাও আমাদের ছেলেদের স্কুলে পাঠাবো না। প্রয়োজনে স্থানান্তর শংসাপত্র নিয়ে অন্য বিদ্যালয়ে পাঠাবো। দেখি কী করে স্কুল চলে।

এখন দেখার আজ রান্না শুরু হলেও কতদিন এই ভাবে চলবে। কারণ আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি যদি বাস্তব হয়, যদি স্কুলে ছাত্র ছাত্রী না থাকে তাহলে কি স্কুলটি থাকবে? এই প্রশ্ন নিয়ে এখন তাকিয়ে গোটা গ্রাম।

এদিন ওই স্কুল উপস্থিত ছিলেন ঝালদা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও রাজকুমার বিশ্বাস, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুব্রত দেব, ঝালদা ১ নং চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভঙ্কর নন্দ সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.