পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ভিড়ের চাপে প্রবল হুড়োহুড়ি, বেশ কয়েকজন আহত, অসুস্থও বেশ কিছু

বুধবার সকালে আচমকাই জনজোয়ার আছড়ে পড়ল পুরীর মন্দির চত্বরে। সকাল সকাল পুজো দিতে এসেছিলেন ভক্তরা। কিন্তু মন্দিরে ঢোকা দূর অস্ত‌্ প্রবেশ দ্বার পর্যন্ত পৌঁছতেই পারলেন না তাঁরা। মন্দিরের পূর্ব এবং পশ্চিম দিকের ফটক দু’টি খুলে দেওয়া হয়েছিল ভক্তদের জন্য। দু’টি গেটের বাইরেই ছিল থিকথিকে ভিড়। শেষে ভিড় ঠেলে ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করতে গেলে পদপিষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। ভিড়ের চাপে, জনতার হুড়োহুড়িতে পড়ে গিয়ে আহত হন পুণ্যার্থীরা। অনেকের শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয়। অসুস্থও হয়ে পড়েন কেউ কেউ। তবে কাউকেই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মাধ্যমিকের মতো বেশ কিছু বোর্ডের পরীক্ষা শেষ হয়ে যায় পুরীতে এমনিতেই গত কয়েকদিন ভক্ত সমাগম বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে বেশি। বুধবার মন্দির চত্বরে লক্ষাধিক ভক্ত সমাগম হয়। পুলিশ মোতায়েন থাকলেও পরিস্থিতি সামলানো যায়নি। বুধবার পুলিশ সংবাদ সংস্থা ওড়িশা টিভিকে জানিয়েছে, বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। কেউ গুরুতর অসুস্থও হয়ে পড়েনি। তবে পরিস্থিতি কিছু ক্ষণের জন্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন ভক্তরা। আচমকা পুরীর মন্দিরে এই ভিড়ের কারণ কী তা জানিয়ে পুলিশ বলেছে, বুধবার ছিল ফাল্গুন মাসের সংক্রান্তি। প্রতি সংক্রান্তির মতোই বুধবারও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে বিপুল ভক্তসমাগম হয়। তাতেই সমস্যা বাধে।

কিন্তু পর্যটকদের অভিযোগ, প্রতি সংক্রান্তিতে ভিড় হবে জেনেও ভক্ত সমাগম নিয়ন্ত্রণের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেননি মন্দির কর্তৃপক্ষ। এতে ভক্তদের বিড়ম্বনা বাড়ে। পুজো দিতে এসে বিগ্রহের কাছেও পৌঁছতে পারেননি অনেকে। উল্টে জখম হন। অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই সংক্রান্তিতে মন্দির চত্বরে পরিস্থিতি আরও খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। লক্ষাধিক ভক্ত সমাগম হয়েছিল মন্দিরে। এক ভক্তের কথায়, ‘‘মন্দিরে যখন মাছি না গলা ঠাসাঠাসি ভিড়ে প্রায় পিষে যাওয়ার জোগাড়, তখন দেখলাম ভিড় থেকে দূরে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী নিজেদের মধ্যে গল্পগুজব করছেন। এই যদি পরিস্থিতি হয়, তবে এই পুলিশ কর্মীদের মোতায়েন করার প্রয়োজন কী?’’ যদিও পুলিশ বলেছে, ভিড়ের কথা ভেবে মন্দিরের পূর্ব এবং পশ্চিমের ফটক দু’টি খুলে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও বিপুল পরিমাণে ভক্তসমাগম সামলানো যায়নি।

পুরীর পুলিশ সুপার কে ভি সিংহ অবশ্য বলেছেন, ‘‘গুজবে কান দেবেন না। ভিড়ের চাপে কয়েকজন পড়ে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে একজন মহিলা ভক্ত জখম হন। তা নিয়েই অযথা হইচই করা হচ্ছে। পুলিশ ওই মহিলাকে সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। তাঁকে হাসপাতালেও নিয়ে যেতে হয়নি।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.