শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কখনও ভারত, কখনও আরএসএস, কখনও আবাফ ধর্মের নামে আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারিও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। আর ইমরান খানের উদ্ধত কন্ঠের সেইসব বক্তব্যকে একেবারে ঠাণ্ডা গলায় নস্যাৎ করে দিয়েছেন ভারতের এক মহিলা অফিসার। শনিবার সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনিই হিরো। ভারতীয়রা বলছেন, Indian Lioness.
মাত্র ৫০ মিনিটের বক্তৃতা আর পাঁচটা প্রশ্নেই তিনি কার্যত পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিয়েছেন তিনি। ইনি ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের ফার্স্ট সেক্রেটারি বিদিশা মৈত্র। পরণে সাদা শাড়ি, চোখে চশমা। একেবারে ঠাণ্ডা গলায় একে একে পাকিস্তানের সব মিথ্যের মুখে জবাব ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় ভারতকে আক্রমণের জবাব যেভাবে দিলেন এই কূটনীতিক, তা দেখে গোটা দেশ মুগ্ধ। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁকে নিয়ে।
ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস-এর ২০০৯ ব্যাচের অফিসার বিদিশা। ২০০৮-এ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা পাশ করেন। সারা দেশের মধ্যে ৩৯ র্যাংক করেছিলেন তিনি। ২০০৯-এ বিদেশ মন্ত্রকের ‘বেস্ট অফিসার ট্রেনি’ হিসেবে গোল্ড মেডেলও পান। ‘পারমানেন্ট মিশন অব ইন্ডিয়া টু দ্য ইউএন’-এর সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী রাষ্ট্রসংঘে ভারতের কনিষ্ঠতম সদস্য বিদিশা। নিরাপত্তা পরিষদে ভারত কোন বিষয়গুলি তুলবে তা দেখার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
মাত্র ৫০ মিনিট সময় নিয়েছিলেন তিনি পাকিস্তানের সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য। আর সেই সময়ে মাত্র পাঁচটা প্রশ্নবাণ ছুড়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের দিকে। পাকিস্তানের কাছে তাঁর প্রশ্ন ছিল, রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় থাকা ১৩০ জন জঙ্গি যে তাদের দেশেই রয়েছে সেটা কি অস্বীকার করতে পারবেন ইমরান? মনে করিয়ে দেন, বিশ্বের একমাত্র সরকার যারা রাষ্ট্রসংঘের নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা আল-কায়দাকে পেনশন দেয়।
বিদিশা আরও বলেন, “এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক যে, পাক প্রধানমন্ত্রী গোটা বিশ্বকে আড়াআড়ি ভাবে ভাগ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা-ওরা, ধনী-গরিব, উত্তর-দক্ষিণ, উন্নত-উন্নয়নশীল এবং মুসলিম-অন্যান্য। তাঁর এই ভাষণ প্ররোচনামূলক। ঘৃণায় ভরা।”
ইমরান খান একসময় ক্রিকেট অর্থাথ জেন্টলম্যান’স গেম খেলেছেন, সেটাও মনে করিয়ে দিয়ে বিদিশা বলেন, কেন তাঁর বক্তব্য জুড়ে এত অশ্লীলতা।