আমেরিকায় দেউলিয়া আরও এক জনপ্রিয় ব্যাঙ্ক! সিলিকন ভ্যালির পর মুখ থুবড়ে পড়ল সিগনেচার

সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর একই পথে হাঁটতে বাধ্য হল আমেরিকার আরও এক জনপ্রিয় ব্যাঙ্ক। রবিবার বন্ধ হয়ে গেল সিগনেচার ব্যাঙ্ক। সিলিকনের মতো তার গচ্ছিত অর্থ এবং যাবতীয় নথিপত্র অধিগ্রহণ করেছে সরকার।

গ্রাহকদের মাঝে জনপ্রিয় ছিল নিউ ইয়র্কের সিগনেচার ব্যাঙ্ক। বহু মানুষ এই ব্যাঙ্কে সঞ্চিত অর্থ রেখেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ব্যাঙ্কটির অগ্রগতি থমকে যায়। আমেরিকার প্রশাসন অবশ্য গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছে। সোমবার থেকেই তাঁরা তাঁদের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে সচল রাখতে দেশের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলিকেও সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন।

ব্যাঙ্কগুলির গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে বাড়তি অর্থের জোগান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকার ফেডেরাল রিজার্ভ। আমেরিকান ট্রেজারি, ফেডেরাল ডিপোজিট ইনসিওরেন্স কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘‘আমেরিকার অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আমরা করছি। আমাদের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার উপর গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে।’’

সিগনেচার ব্যাঙ্কের আগে শুক্রবার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার নথিপত্রও অধিগ্রহণ করেছে সরকার। ২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার পর, একেই খুচরো ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা বলা হচ্ছে।

প্রযুক্তিভিত্তিক স্টার্টআপগুলিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অল্প সময়ে বিপুল অর্থ সঞ্চয় করেছিল সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক। আমেরিকার বন্ডেই এই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির হার কমাতে ফেডারেল রিজার্ভ গত বছর সুদের হার বাড়াতে শুরু করে, যার ফলে বন্ডের দর কমে যায়। স্টার্টআপগুলিও করোনা অতিমারির পর থেকে ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে। ব্যাঙ্ক থেকে গ্রাহকেরা সঞ্চিত অর্থ তুলে নেন। গ্রাহকদের টাকার জোগান দিতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নিজেদের শেয়ার বিক্রি করতে হয়। ফলে অচিরেই ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে টান পড়ে। কিছু দিন আগেই সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের তরফে যে পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছিল, তাতে বলা হয়, ব্যাঙ্কটি গত কয়েক দিনে প্রায় ২০০ কোটি ডলার খুইয়েছে। ফলে ব্যাঙ্কের বিপর্যয় এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে পড়ে। একই পরিণতি হল সিগনেচার ব্যাঙ্কেরও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.