শিক্ষা ক্ষেত্রে শুধু বেআইনি ভাবে নিয়োগই নয় বিভিন্ন সরকারি কর্মীদের ট্রান্সফার পোস্টিংয়েও মোটা অঙ্কের টাকা থেকে লাভবান শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এমনই দাবি করা হয়েছে ইডি সূত্রে। জানা গিয়েছে সরকারি কর্মীদের ট্রান্সফার ও পোস্টিংয়ে জন্য নির্ধারিত ছিল আলাদা আলাদা ‘রেট –চার্ট’। শান্তনু বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মেলে ট্রান্সফার ও পোস্টিংয়র সুপারিশের বহু চিঠি। হুগলিতে নিজের অফিসে বসে শান্তনু সেই সব আবেদন পত্র গ্রহণ করতেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
চাকরি পেতে শান্তনুর কাছে সুপারিশ করতেন তৃণমূলের সদস্যরা এমনই বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি শান্তনুর। রিমান্ড লেটারে ইডির দাবি, ২৬ জানুয়ারি শান্তনুর যে বয়ান রেকর্ড করা হয় সেখানে এই দাবি করেন শান্তনু। আরও জানা গিয়েছে শান্তনুর হাত ঘুরে দলীয় সদস্যদের সুপারিশ পৌঁছেছে দলের নেতাদের কাছে। শান্তনু কার কাছে পৌঁছে দিতেন সেই নথি সেই বিষয়ে খোঁজ শুরু করেছে ইডি। শান্তনুকে জেরা করে সেই সকল নেতাদের নাম জানতে চাইছে ইডি।
ইডির তদন্ত উঠে আসছে শান্তনুর কথায় ১৯ কোটি টাকা তাপস মণ্ডল কুন্তলকে দিয়েছিল। আজ আদালতে ওই দাবি করে ইডি। রিসর্ট, হোম স্টে খুলে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টায় ছিল শান্তনু। পাশাপাশি রাজনীতিবিদদের সঙ্গে লিঙ্ক ম্যান হিসেবে কাজ করতেন।
তদন্তকারীদের দাবি প্রায় প্যারালাল ব্যবস্থা তৈরি করে ফেলেছিলেন। নিয়গের মতো বদলির ক্ষেত্রেও সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হত। এজেন্ট এবং সাব এজেন্টরা জেলা থেকে সুপারিশ নিয়ে আসতেন যারা এমন এমন চাকরি পেতে চাইছে তাদের। এর মধ্যে অনেক নেতা, মন্ত্রী, কাউন্সিলরের নাম রয়েছে যারা সুপারিশ করত। এই সুপারিশপত্র পৌঁছাত শান্তনু-কুন্তলদের কাছে। তাঁরা এই সুপারিশ পৌছে দিতেন মানিক ভট্টাচার্য-পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের কাছে যারা এনওসি দিতেন।
কত সম্পত্তি করেছে শান্তনু? হুগলির জিরাটে বাড়ির কাছে ধাবা ও হোম স্টে রয়েছে শান্তনুর। বারুইপাড়ায় রেস্তঁরা ও একটি ধাবা রয়েছে। ২০২১ সালে ওই ধাবা তৈরি হয়। বলাগড়ে গঙ্গার ধারে বিশাল রেস্তঁরা রয়েছে। নামে বেনামে বহু জমি রয়েছে। রাজারহাট নিউটাউনে রয়েছে ফ্ল্যাট ও জমি।
ইডির জানার বিষয় ছিল, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে। সেই খোঁজ করতে গিয়েই দেখা গিয়েছে কোথাও রেস্তঁরা, কোথায় হোমস্টে হিসেবে বিনিয়োগ করা হয়েছে। বলাগড়ে গঙ্গার ধারেই একটি বিশাল রিসর্ট রয়েছে শান্তনুর। এছাড়াও বলাগড় স্টেশন ও জিরাটে বহু জমি রয়েছে শান্তনুর। চুঁচুড়ায় ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। এছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি দামী গাড়ি। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী ও তৃণমূলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর কাছে ওই বিপুল টাকা এল কোথা থেকে? সেই তদন্ত করতে গিয়েই সবকিছু বেরিয়ে আসছে।