আমি সেই দেশ থেকে আসছি, যে বিশ্বকে যুদ্ধ দেয়নি, বুদ্ধ দিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ভাষণে একথা মনে করিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বোঝাতে চাইলেন, ভারত এখনও গৌতম বুদ্ধের শান্তি ও অহিংসার বাণীতে বিশ্বাস করে। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জোরালো বার্তা দিলেন। ১৭ মিনিটের ভাষণে তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ এখন মানবতার সামনে সবচেয়ে বড় বিপদ। তার বিরুদ্ধে সব দেশকে একজোট হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।
ভাষণের শুরুতে মোদী তাঁর দ্বিতীয়বার ভোটে জিতে ক্ষমতায় ফেরার কথা উল্লেখ করেন। তার পরে বলেন, তাঁর সরকার দরিদ্র ভারতবাসীর জন্য কী কী উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিয়েছে। মোদীর দাবি, পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে ভারত। এর পরে তিনি তোলেন সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ। ভাষণ শেষ করেন স্বামী বিবেকানন্দের উদ্ধৃতি দিয়ে।
তাঁর কথায়, চলতি বছরে মহাত্মা গান্ধীর ১৫০ বছরের জন্মদিন পালিত হচ্ছে। এই সময় আমি ১৩০ কোটি ভারতীয়ের প্রতিনিধি হিসাবে রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তব্য পেশ করতে এসেছি। পরে তিনি বলেন, এবছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোট হয়েছে। জনগণ আমাদের আগের চেয়ে বেশি ভোটে আমাকে ও আমার সরকারকে নির্বাচিত করেছে। তাই আমি আপনাদের মধ্যে আসতে পেরেছি।
মোদীর দাবি, ভারত যে উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি কার্যকর করেছে, তা সারা বিশ্বের মানুষকে প্রেরণা দিতে পারে। প্রথমেই তিনি হেলথ ইনসিওরেন্স স্কিমের কথা উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, ওই প্রকল্পে ৫০ কোটি মানুষকে বছরে চিকিৎসা করাতে গেলে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় পান।
পরে তিনি বলেন, আমাদের মতো এক বিকাশশীল দেশ দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ফাইনান্সিয়াল ইনক্লুশন প্রকল্প চালায়। সেই প্রকল্পে পাঁচ বছরে ৩৬ কোটি গরিব মানুষ ব্যাঙ্কে খাতা খুলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত কেবল নিজের ভালোর জন্য চিন্তা করে না। সারা বিশ্বের কল্যাণের কথা ভাবে।
একইসঙ্গে তিনি সরকারের আগামী পাঁচ বছরের পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, জল সংরক্ষণে যেমন গুরুত্ব দেওয়া হবে, তেমন ১৫ কোটি মানুষের বাড়িতে জলের লাইনও দেওয়া হবে। দূর দূর গ্রামাঞ্চলে সওয়া লক্ষ কিলোমিটারের বেশি সড়ক বানানো হবে। ভারত যখন স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তি পালন করবে, তখন আমরা গরিবদের জন্য আরও দু’কোটি বাড়ি নির্মাণ করে দেব।
শেষে তিনি বলেন আজ থেকে ১০০ বছরের বেশি আগে শিকাগোয় ধর্মমহাসভায় স্বামী বিবেকানন্দ শান্তির বাণী প্রচার করেছিলেন। ভারতের সেই মহান আধ্যাত্মিক গুরুর কথায় আমরা এখনও বিশ্বাস করি। আমরা আন্তর্জাতিক মহলে শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা দিতে চাই।