লাগাতার ৫ দিন সম্প্রচার বন্ধ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার থেকে ফের টিভির পর্দায় ফিরেছে পছন্দের চ্যানেলগুলি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রিয় চ্যানেল ফিরে আসায় দর্শকদের মুখে ফিরেছিল হাসি। কিন্তু সেই হাসি কতদিন বজায় থাকবে? তা নিয়ে উঠে গিয়েছে প্রশ্ন। কারণ টিভিতে চ্যানেল ফিরে এলেও, দামবৃদ্ধি নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। মাল্টিসিস্টেম অপারেটর (এমএসও) এবং অপারেটরদের কাছে এখনও নতুন চ্যানেলের মাসুল কত হবে তা জানতে পারেননি গ্রাহকরা। টেলিকম রেগুলেটরি ইন্ডিয়া (ট্রাই) ও চ্যানেল সংস্থাগুলি এক তরফা ভাবে দামবৃদ্ধি করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। চ্যানেলগুলির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জেরে মতপার্থক্য শুরু হলে এমএসও এবং কেবল অপারেটররা প্রতিবাদে শামিল হন। তার পরেই বন্ধ হয়ে যায়, কেবল পরিষেবা।
ফলস্বরূপ গত সপ্তাহে জিটিপিএল-কেসিবিপিএল, হ্যাথওয়ে, ডেনের মতো আওতাধীন দর্শকরা সোনি, জ়ি এবং স্টারের চ্যানেলগুলি দেখতে পাননি। জানানো হয়, চ্যানেলের বর্ধিত মাসুল মানতে না-চাওয়ায় সম্প্রচার বন্ধ করে দেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। আলাপ-আলোচনার পর বৃহস্পতিবার রাত থেকে ধাপে ধাপে ফেরানো হয় জনপ্রিয় চ্যানেলগুলি। তবে বেশ কিছু অপারেটার জ়ি-এর সব চ্যানেল দেখাতে পারছেন না বলেই অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, চ্যানেলগুলির দাম কমানো হবে। কিন্তু প্রায় এক সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেলেও, কিছুই জানানো হয়নি এমএসও বা কেবল অপারেটরদের।
আর এমন ঘটনার পরেই তাঁরা আশঙ্কার প্রহর গুনতে শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় কেবল অপারেটররা। কারণ চ্যানেল আবারও চলে যাওয়ার আশঙ্কায় গ্রাহকদের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন অপারেটররা। এক কেবল অপারেটরের কথায়, ‘‘চ্যানেলের দাম কতটা বাড়বে, তা জানতে চাইছেন গ্রাহকরা। কিন্তু তাঁদের কোনও স্পষ্ট উত্তর দিতে পারছি না। কারণ আমরাই তো চ্যানেলের দাম নিয়ে অন্ধকারে রয়েছি।’’ তবে এমএসও-দের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কেবল চ্যানেলের এক তরফা ভাবে দামবৃদ্ধি নিয়ে আটটি রাজ্যের হাই কোর্টে মামলা চলছে। সেই তালিকায় আছে কলকাতা হাই কোর্টও। এ ক্ষেত্রে কেরল হাই কোর্টের রায়ের দিকেই তাকিয়ে আছেন সকলে। কেরল হাই কোর্ট যদি দামবৃদ্ধির পক্ষে রায় দেয়, তা হলে দর্শককে সেই দামই দিতেই হবে। যত দিন না কোনও চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, তত দিন চ্যানেলের পুরনো দামই নেওয়া হবে দর্শকদের থেকে। আদালতের নির্দেশে যদি সেই অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া দামেই চ্যানেল চালাতে হয়, তখন সমস্যায় পড়বেন গ্রাহক থেকে শুরু করে অপারেটার-এমএসওরা। তখন আবার নতুন করে জটিলতা তৈরি হবে। সেই ভাবনা থেকেই নতুন করে আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা।