বরাবরই বাংলার বুদ্ধিজীবীদের অবস্থান প্রভাব ফেলে নির্বাচনে। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম ঘটনার পর শাঁওলী মিত্র, অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, জয় গোস্বামী, প্রতুল মুখোপাধ্যায়, বিভাস চক্রবর্তীদের ভূমিকা রীতিমতো প্রভাব ফেলেছিল সাধারণ মানুষের মনে। তারপর অনেক জল গড়িয়েছে। গত বছরও পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকারের কঠোর নিন্দা করতে দেখা গেছে অনেককে।
সম্প্রতি অনীক দত্ত পরিচালিত ‘ভবিষ্যতের ভূত’ অজানা কারণে সিনেমা হলে প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। তার পরিণাম গড়ায় অনেক দূর। সরকারের ভূমিকার বিরোধীতা করেন প্রবীন-নবীন কলাকুশলীরা। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শঙ্খ ঘোষ, নবনীতা দেব সেন থেকে শুরু করে অপর্ণা সেন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান। অনেক আবার নীরব থাকেন। যদিও শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ছবিটির প্রদর্শনে বাধা দেওয়া উচিৎ নয় এজন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তার মধ্যে রয়েছেন দুজন তরুণী অভিনেত্রী। যাদবপুর কেন্দ্রে মিমি চক্রবর্তী এবং বসিরহাট কেন্দ্রে নুসরত জাহান। দুই অভিনেত্রীর প্রার্থী হওয়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিকৃতিও কম হয়নি। এ ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এক সাংবাদিক সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন– এর আগে রূপা গাঙ্গুলি এবং লকেট চট্টোপাধ্যায় যখন বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন সেই সময়ও তাঁদের নিয়ে বিকৃতি হয়েছিল।
কিন্তু প্রতিবারই যে কোনও নির্বাচনের আগে যে সব শিল্পী-সাহিত্যিক-চিত্রকরদের মাইক হাতে বিভিন্ন সভায় দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময় তাঁরা আশ্চর্য ভাবে নীরব। এমনিতেই বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে শিবির ভাগ হয়ে গিয়েছে। অবশ্য কিছু দিন আগেই ব্রিগেডে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় জনসভায় বুদ্ধিজীবীদের জন্য আলাদা একটি মঞ্চ করা হয়েছিল। সেখানে পুরনোদের পাশাপাশি দেখা গিয়েছে শিলচরে গেরিয়া শিবিরের হাতে আক্রান্ত কবি শ্রীজাতকেও। কৌশিক সেনের কথায়, যারা পরিবর্তেনের এক সময় জন্য লড়েছিলেন তাঁরা অনেকেই কোনও না কোনও আকাদেমির সভাপতির পদ পেয়েছেন! এবার কি তাহলে নির্বাচনী ময়দানে বুদ্ধিজীবীদের নীরব থাকতে দেখা যাবে?