জনপ্রিয় লোকশিল্পী ও ঝুমুর শিল্পী সুভাষ চক্রবর্তী আজ সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
তিনি বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড়ে জন্মগ্ৰহণ করেন। স্থানীয় স্কুলে বিদ্যালাভের পর সোনামুখী কলেজে স্নাতক পাশ করেন। বাড়িতেই ছিল সঙ্গীতের পরিবেশ।সেই পরিমন্ডলে তিনি শুরু করেন সঙ্গীত সাধনা। সত্তরের দশকে তার গাওয়া বিশিষ্ট কবি অরুণ চক্রবর্তী র “রাঙামাটির দেশে যা- লালপাহাড়ির দেশে যা” অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করে। তার পর থেকে একের পর এক তিনি লোক ও ঝুমুরের আঙ্গিকে বহু গান গেয়েছেন-যা তাকে জনপ্রিয় করে তোলে। তার গাওয়া “বাঁকুড়ার মাটিকে পেন্নাম করি দিনে দুপুরে” গানটি অসামান্য জনপ্রিয়তা লাভ করার পর বিশিষ্ট শিল্পী উষা উত্থুপ এই গানটি ফের রেকর্ড করেন। বাঁকুড়ার স্বনামধন্য চারণকবি বৈদ্যনাথের বেশ কিছু কবিতা সুরারোপ করে স্বকন্ঠে পরিবেশন করেন। “শুকা হাজা দেশটাকে”, আকাশে তুই হাত বাড়ালি সাগরে তে পা”, “বাঁকুড়ার ঘোড়া” প্রভৃতি চারণকবির লেখা গান জনপ্রিয়তা অর্জন করে।বহু নামীদামী রেকর্ড কোম্পানিতে তিনি বহু গান গেয়েছেন।
সুভাষবাবুর বিশিষ্ট বন্ধু তথা জেলার বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক স্বপন বন্দোপাধ্যায় বলেন, সুভাষ বাবার (চারণকবি বৈদ্যনাথ)কাছে প্রায়ই আসতো আলোচন করতো, বাবার লেখা বেশ কিছু কবিতা নিজেই সুরারোপ করে গেয়ে অসামান্য সাফল্য পেয়েছে। তার চলে যাওয়া সঙ্গীত জগতে বিরাট ক্ষতি।
মৃত্যু কালে সুভাষবাবু স্ত্রী, এক পুত্রও এক কন্যা রেখে গেছেন। তার পুত্র অর্নব ও কন্যা অর্পিতা দুজনেই পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে লোক শিল্পকেই বেছে নিয়েছেন।সম্প্রতি একটি বেসরকারি চ্যানেলে পিতা ও পুত্রী এক সঙ্গে লোক ও ঝুমুর সঙ্গীত পরিবেশন করেন যা বেশ সমাদৃত হয়। তার আকস্মিক পরলোকগমনে জেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।