টেনিস জীবনে ইতি, শেষ হল দু’দশকের স্বপ্নের সফর, দুবাইয়ে প্রথম রাউন্ডেই হার সানিয়া মির্জার

বিদায়টা মধুর হল না সানিয়া মির্জার। দুবাই ডিউটি ফ্রি টেনিস প্রতিযোগিতার প্রথম রাউন্ডেই হেরে গেলেন সানিয়ারা। তাঁর এবং ম্যাডিসন কিজের জুটি ৪-৬, ০-৬ ব্যবধানে হারল ভার্নোকিয়া কুদেরমেতোভা-লিউডমিলা সামসোনোভা জুটির কাছে। এই পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হল সানিয়ার দু’দশকের বর্ণময় টেনিসজীবন।

দুবাইয়ের প্রতিযোগিতা খেলে টেনিস র‌্যাকেট তুলে রাখার কথা আগেই ঘোষণা করে ছিলেন ছ’টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী সানিয়া। খেলোয়াড় জীবনের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলতে নেমেছিলেন গত জানুয়ারিতে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে মহিলাদের ডাবলসে দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে গেলেও মিক্সড ডাবলসের ফাইনালে উঠেছিলেন রোহন বোপান্নাকে নিয়ে। যদিও শেষ বার খেতাব অধরা থেকে গিয়েছে প্রাক্তন চ্যাম্পিয়নের। দুবাইয়েও ভক্তদের আশা পূরণ করতে পারলেন না ভারতের সর্বকালের সেরা মহিলা টেনিস খেলোয়াড়। তাঁদের জুটি প্রথম সেটে কিছুটা লড়াই করলেও দ্বিতীয় সেটে প্রত্যাশিত মতো ল়ড়াই করতে পারল না।

মঙ্গলবার টেনিস কোর্টে দাপিয়ে খেলা সানিয়া বুধবার থেকে প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড়! সানিয়া নিঃসন্দেহে ভারতের সর্বকালের সেরা টেনিস খেলোয়াড়। ভারতের মেয়েরা বিশ্বপর্যায়ে টেনিস খেলতে পারে, তা সানিয়েই প্রথম প্রমাণ করেছিলেন। লিয়েন্ডার পেজ, মহেশ ভূপতি পরবর্তী ভারতীয় টেনিসকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তিনিই। সেই যাত্রা শেষ হল দুবাইয়ে।

২০০৩ সালে পেশাদার টেনিসে পা রাখার পর থেকেই সানিয়া শুধু ভারতের নয়, হয়ে উঠেছিলেন এশিয়ার মহিলা টেনিসের মুখ। এক সময় সেরিনা উইলিয়ামস, মারিয়া শারাপোভাদের সঙ্গেই উচ্চারিত হত সানিয়ার নাম। কিন্তু বার বার চোট আঘাত তাঁকে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। সিঙ্গলস ছেড়ে ডাবলসকে বেছে নেন প্রতিযোগিতামূলক টেনিসের জন্য।

গত কয়েক বছর বিশ্ব টেনিসের আঙিনায় সানিয়াই ছিলেন ভারতের এক এবং একমাত্র প্রতিনিধি। বাকি যাঁরা আছেন, তাঁরা কেউ সর্বোচ্চ পর্যায় নিজেদের উন্নত করতে পারেননি। ফলে সানিয়ার ছায়া থেকেও বেরিয়ে আসতে পারেননি। ৩৬ বছরের সানিয়া নিজের ইচ্ছায় এবং শর্তে বেছে নিয়েছেন অবসরের সময়। সেই অধিকার তিনি অর্জন করেছেন কঠোর পরিশ্রম, অধ্যাবসায়, একাগ্রতা এবং সাফল্য দিয়ে। তাঁর অবসর মেনে নেওয়া কঠিন ভক্তদের পক্ষে। তবু তাঁর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানো ছাড়া আর কীই বা করার আছে তাঁদের! সানিয়া দু’দশক ধরে দেশকে যে ভাবে গর্বিত করে গিয়েছেন, তাই বা কম কী?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.